পাতা:কথা ও কাহিনী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/১১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১৪
কথা

দাসীর হাতে দিয়ে ফাগের থালা
 রানী বনে এলেন হেনকালে।
তান ধরিয়া ইমন ভূপালিতে
 বাঁশি তখন বাজছে দ্রুত তালে।

কেসর কহে, “তােমারি পথ চেয়ে
 দুটি চক্ষু করেছি প্রায় কানা।”
রানী কহে, “আমারও সেই দশা!”
একশাে সখী হাসিয়া বিবশা—
পাঠান-পতির ললাটে সহসা
 মারেন রানী কাঁসার থালাখানা।
রক্তধারা গড়িয়ে প'ড়ে বেগে
 পাঠান-পতির চক্ষু হল কানা।

বিনা মেঘে বজ্ররবের মতাে
 উঠল বেজে কাড়া-নাকাড়া।
জ্যোৎস্নাকাশে চমকে ওঠে শশী,
ঝনঝনিয়ে ঝিকিয়ে ওঠে অসি,
সানাই তখন দ্বারের কাছে বসি
 গভীর সুরে ধরল কানাড়া।
কুঞ্জবনের তরুতলে-তলে
 উঠল বেজে কাড়া-নাকাড়া।