পাতা:কথা বনাম কাজ - প্রমথনাথ রায়চৌধুরী.pdf/২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কথা বনাম কাজ কৰ্ম্মীত হৃদয় আলোড়িত হইয় বার বার আহ্বানধ্বনি উচ্ছসিত হইতেছে, —এস এস, হে সোণার বাঙ্গলার যমজসস্তান, সমবেত হিন্দুমুসলমান, মায়ের কাজে এস ! ইহা উত্তেজনা নয়, উদ্দীপনা নয় ; বিধাতৃপ্রেরিত সাবধানী তুরীধ্বনি । দীর্ঘযাত্রার আশ্বাসবাণী ! মায়ের নিজের অভয়ঘোষণা ! , । আর তোমরাও এস, হে বঙ্গের কুললক্ষ্মীগণ, আজ আমি তোমাদিগকেই বিশেষভাবে কৰ্ম্মশালায় আহবান করিতেছি । আমরা তোমাদিগকে ঘরে আটক রাখিয়াছি, তোমরা আমাদিগকে বাহিরে নির্বাসিত করিয়াছ ; এ বিচ্ছেদের তুলনায় বঙ্গব্যবচ্ছেদ অতি অকিঞ্চিৎকর । তাই আমি বিশেষভাবে তোমাদিগকেই আবাহন করিতেছি । এই দুৰ্দ্দিনে তোমাদের বেণী মুক্ত করিয়া দাও । সে বেণী আর বাধিও না । যতদিন বিচ্ছিন্ন বঙ্গ যুক্ত না হয় ততদিন উহাও অযুক্ত থাকুক। বিদেশী বিলাসপ্রসাধনের সম্ভার সব স্বদেশ-দেবতার পদে নিবেদন কর। মায়ের স্বহস্তের স্নেহবয়ন—মোটা কাপড়েই তোমাদের লজ্জা নিবারণ হইবে ; আমাদের মুখ রক্ষা হইবে। পরের নুন খাওয়াইয়া আর আমাদের গোলাম বানাইও না । পরের চিনির গোরারূপে যতখানি মিষ্টত্ব, তাহ পরীক্ষা করিতে বাকী নাই! পরের ঝুটা কাচকে চূর্ণ করিয়া নিজের কাঞ্চনকে করের ভূষণ করিয়া লও। আর কাজই বা কি কাঞ্চনে! সোণ হইতেও যাহা তোমাদের নিকট মহার্ঘ, এ দুঃসময়ে সেই দারিদ্র্যে পূত, শুভশুভ্র শঙ্খ ঐকরে নবশোভায় দীপ্যমান হইয়া উঠুক। সেই শঙ্খপরিধানের ক্ষণে আমাদের কীৰ্ত্তিমন্দির হইতে সমুথিত ঘন ঘন মঙ্গল শঙ্খরব স্বদেশে বিদেশে জয়ঘোষণা করিয়া ফিরিবে। হে ব্ৰতচারিণী কল্যাণীগণ, পতিপুত্রের হিতার্থে তোমরা বহু ব্রতের অনুষ্ঠান করিয়াছ ; এবার বৃহত্তর ব্ৰত উদ্যাপনের জন্য প্রস্তুত হও। তোমাদের পিতামহী-প্রপিতামহীরা জলন্ত চিতায় እግ