পাতা:কথা বনাম কাজ - প্রমথনাথ রায়চৌধুরী.pdf/৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কথা বনাম কাজ । কথার মধ্য দিয়া ছিদ্রান্বেষী হুই একটা সাহিত্যিক শর যেন লক্ষ্যভ্রষ্ট হইয়াই বিন্ধ হইয়াছে ও বিদ্ধ করিয়াছে। অসিহীন মসিসমরের এটা দপ্তর। সম্পূর্ণরূপে নিরীহ ও নিরাপদ হইলেও, ইহাকে ন্যায়যুদ্ধ বলিতে পারি না। সে সব অতীত আলোচনার সমালোচনা করা আমার উদেশু নহে। উভয় পক্ষই আহত হইয়া একান্তে আত্মসংবরণ ও আত্মসংশোধন করিয়া লইয়াছেন। এখন এমন একটী সন্ধিস্থলে দুইদল আসিয়া দাড়াইয়াছেন, যেখান হইতে মিলনমগুপের স্নিগ্ধ ছায়া অতি নিকটবর্তী হইয়াছে। । তর্ক উঠিয়াছিল,—যে কথা বা ব্যক্ত-মনোবাথার মূল্য এক কাণাকড়িও ৷ নহে, যে অক্ষম-চীৎকার বহুবর্ষ ধরিয়া আমাদের ভাগ্যবিধাতাগণের অবজ্ঞা প্রাপ্ত হইয়া আসিতেছে, সেই নিদারুণ বিড়ম্বনার পুনরাবৃত্তি বন্ধ করা উচিত কি না? রবীন্দ্রবাবু তীব্র ভাষায় এই কাকুনিকে ধিক্কার দিয়াছেন। রোষে ক্ষোভে গর্জন করিয়া বলিয়াছেন,—আর না, যথেষ্ট কাদিয়াছ বাঙ্গালী, এখন কাজ কর ; উহাই সফলতার সহপায়। এ উত্তেজনা শুনিতে এতই সুন্দর এবং নিপুণ কষ্ঠের উন্মানায় এতই মৰ্ম্মস্পর্শী, যে উহা নিঃসংশয়ে মানিয়া লইবার প্রলোভন এড়ান সহজ হইয় উঠে না। কিন্তু তলাইয়৷ দেখিলে দ্বিধা আসে। কাজ ত করিবই; কথা কেন ছাড়িব ? অন্যায়ের প্রতিবাদ বন্ধ করির কেন ? অবিচারের সমালোচনা কেন ত্যাগ করিব ? : রবীন্দ্র বাৰু বলিতেছেন,—উহার নামান্তর ভিক্ষা। ‘ভিক্ষায়াং নৈব নৈৰ চ'। তা হোঁক্‌ ; তাই বলিয়া প্রবলের কাছে আমাদের কণ্ঠরোধ হইয়া যাইবে! নিষ্ঠুর ঔদ্ধত্যের মৰ্ম্মস্থলে কোটিকণ্ঠের ক্ষুব্ধ ভাষা একটা ক্ষুদ্র আঘাতও করিয়া আসিবে না। তবে যখন সরকার আইন করিয়া কণ্ঠরোধের ব্যবস্থা করিলেন, তখন সেই অধিকারটাকে অব্যাহত রাখিতে যে লড়াই করিয়াছিলাম, তা কি এইরূপে হারাইতে ? বহুবার কথার বাজেখরচ হইয়া গিয়াছে, জানি ; মাঝে মাঝে কাজে আসে নাই, এ কথা মানি ર