পাতা:কথা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কথা

রাখাল শুধায় আসি ব্রাহ্মণের কাছে
“দেশে পঁহুছিতে আর কতদিন আছে?”


সূর্য অস্ত না যাইতে, ক্রোশ দুই ছেড়ে
উত্তর বায়ুর বেগ ক্রমে উঠে বেড়ে।
রূপনারাণের মুখে পড়ি বালুচর
সঙ্কীর্ণ নদীর পথে বাধিল সমর
জোয়ারের স্রোতে আর উত্তরসমীরে
উত্তাল উদ্দাম। তরণী ভিড়াও তীরে
উচ্চকণ্ঠে বারম্বার কহে যাত্রীদল।
কোথা তীর! চারিদিকে ক্ষিপ্তোন্মত্তজল
আপনার রুদ্রনৃত্যে দেয় করতালি
লক্ষ লক্ষ হাতে। দিগন্তরে যায় দেখা।
অতি তট প্রান্তে নীল বনরেখা;—
অন্য দিকে লুব্ধ ক্ষুব্ধ হিংস্র বারিরাশি
প্রশান্ত সূর্য্যাস্ত পানে উঠিছে উচ্ছাসি
উদ্ধত বিদ্রোহভরে। নাহি মানে হাল,
“ঘুরে টলমল তরী অশান্ত মাতাল
মুঢ়সম। তীব্র শীতপবনের সনে
মিশিয়া ত্রাসের হিম নরনারীগণে
কাঁপাইছে থরহরি। কেহ হতবাক,
কেহ বা ক্রন্দন করে ছাড়ি ঊর্দ্ধডাক,
ডাকি আত্মজনে। মৈত্র শুষ্ক পাংশুমুখে
চক্ষুমুদি’ করে জপ। জননীর বুকে