পাতা:কপালকুণ্ডলা (দ্বিতীয় সংস্করণ).pdf/১১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১০
কপালকুণ্ডলা।

 লুৎফ্-উন্নিসা কহিলেন, “আপাততঃ কপালকুণ্ডলার সহিত স্বামীর চিরবিচ্ছেদ। পরে তিনি আমার হইবেন।”

 পে। “বিবি! ভাল করিয়া বিবেচনা কৰুন; সে নিবিড় বন, রাত্রি আগত; আপনি একাকিনী।”

 লুৎফ্-উন্নিসা এ কথার কোন উত্তর না করিয়া গৃহ হইতে বহির্গতা হইলেন। সপ্তগ্রামের যে জনহীন বনময় উপনগর প্রান্তে নবকুমারের বসতি, সেই দিকে চলিলেন। তৎপ্রদেশে উপনীত হইতে রাত্রি হইয়া আসিল। নবকুমারের বাটীর অনতিদূরে এক নিবিড় বন আছে, পাঠক মহাশয়ের স্মরণ হইতে পারে। তাহারই প্রান্তভাগে উপনীত হইয়া এক বৃক্ষতলে উপবেশন করিলেন। কিছু কাল বসিয়া যে দুঃসাহসিক কার্য্যে প্রবৃত্ত হইয়াছিলেন তদ্বিষয়ে চিন্তা করিতে লাগিলেন। ঘটনাক্রমে তাঁহার অননুভূতপূর্ব্ব সহায় উপস্থিত হইল।

 লুৎফ্-উন্নিসা যথায় বসিয়াছিলেন, তথা হইতে এক অনবরত সমানোচ্চারিত মনুষ্যকণ্ঠনির্গত শব্দ শুনিতে পাইলেন। উঠিয়া দাঁড়াইয়া চারি দিক্ চাহিয়া দেখিলেন যে, বন মধ্যে একটী আলো দেখা যাইতেছে। লুৎফ্-উন্নিসা সাহসে পুৰুষের অধিক, যথায় আলো জ্বলিতেছে সেই স্থানে গেলেন। প্রথমে বৃক্ষান্তরাল হইতে দেখিলেন ব্যাপার কি? দেখিলেন যে, যে আলো জ্বলিতে ছিল, সে হোমের আলো; যে শব্দ শুনিতে পাইয়াছিলেন সে মন্ত্রপাঠের শব্দ। মন্ত্র মধ্যে একটী শব্দ বুঝিতে