পাতা:কপালকুণ্ডলা (দ্বিতীয় সংস্করণ).pdf/১২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কাননতলে।
১২৩

কর্ণের তীক্ষ্ণতা জন্মিলে নিম্নলিখিত মত কথা শুনিত পাইলেন।

 এক জন কহিতেছে, “আমার অভীষ্ট মৃত্যু, ইহাতে তোমার অভিমত না হয়, আমি তোমার সাহায্য করিব না; তুমিও আমার সহায়তা করিও না।”

 অপর ব্যক্তি কহিল, “আমিও মঙ্গলাকাঙ্ক্ষী নহি; কিন্তু যাবজ্জীবন জন্য ইহার নির্ব্বাসন হয়, তাহাতে আমি সম্মত আছি। কিন্তু হত্যার কোন উদ্যোগ আমা হইতে হইবে না; বরং তাহার প্রতিকূলাচরণ করিব।”

 প্রথমালাপকারী কহিল, “তুমি অতি অবোধ, অজ্ঞান। তোমায় কিছু জ্ঞান দান করিতেছি। মনঃসংযোগ করিয়া শ্রবণ কর। অতি গূঢ় বৃত্তান্ত বলিব; চতুর্দ্দিক্ এক বার দেখিয়া আইস, যেন মনুষ্যশ্বাস শুনিতে পাইতেছি।”

 বাস্তবিক কপালকুণ্ডলা কথোপকথন উত্তমরূপে শুনিবার জন্য কক্ষ্যাপ্রাচীরের অতি নিকটে আসিয়া দাঁড়াইয়াছিলেন। এবং তাঁহার আগ্রহাতিশয় এবং শঙ্কার কারণে ঘন ঘন গুরু শ্বাস বহিতেছিল।

 সমভিব্যাহারীর কথায় গৃহমধ্যস্থ এক ব্যক্তি বাহিরে আসিলেন, এবং আসিয়াই কপালকুণ্ডলাকে দেখিতে পাইলেন। কপালকুণ্ডলাও পরিষ্কার চন্দ্রালোকে আগন্তুক পুরুষের অবয়ব সুস্পষ্ট করিয়া দেখিলেন। দেখিয়া ভীতা হইবেন, কি প্রফুল্লিতা হইবেন তাহা স্থির করিতে পারিলেন না। দেখিলেন, আগন্তুক ব্রাহ্মণ-