“কাপালিকের দৃঢ় প্রতিজ্ঞা ভবানীর আজ্ঞা প্রতিপালন। বাহুবলহীন, এই জন্য পরের সাহায্য তাহার নিতান্ত প্রয়োজন। আমাকে ব্রাহ্মণতনয় বিবেচনা করিয়া আমাকে সহায় করিবার প্রত্যাশায় সকল বৃত্তান্ত বলিল। আমি এ পর্য্যন্ত এ দুষ্কর্ম্মে স্বীকৃত হই নাই। এ দুর্বৃত্ত চিত্তের কথা বলিতে পারি না, কিন্তু ভরসা করি যে কখনই স্বীকৃত হইব না। বরং এ সঙ্কল্পের প্রতিকূলাচরণ করিব এই অভিপ্রায়; সেই অভিপ্রায়েই আমি তোমার সহিত সাক্ষাৎ করিলাম। কিন্তু এ কার্য্য নিতান্ত অস্বার্থপর হইয়া করি নাই। তোমার প্রাণ দান দিতেছি। তুমিও আমার জন্য কিছু কর।”
কপালকুণ্ডলা কহিলেন, “কি করিব?”
লু। “আমারও প্রাণদান দাও—স্বামী ত্যাগ কর।”
কপালকুণ্ডলা অনেক ক্ষণ কথা কহিলেন না। অনেক ক্ষণের পর কহিলেন, “স্বামী ত্যাগ করিয়া কোথায় যাইব?”
লু। “বিদেশে—বহু দূরে—তোমাকে অট্টালিকা দিব—ধন দিব—দাস দাসী দিব, রাণীর ন্যায় থাকিবে।”
কপালকুণ্ডলা আবার চিন্তা করিতে লাগিলেন। পৃথিবীর সর্ব্বত্র মানসলোচনে দেখিলেন—কোথাও কাহাকে দেখিতে পাইলেন না; অন্তঃকরণ মধ্যে দৃষ্টি করিয়া দেখিলেন—তথায় ত নবকুমারকে দেখিতে পাইলেন না, তবে কেন লুৎফ-উন্নিসার সুখের পথ রোধ করিবেন? লুৎফ-উন্নিসাকে কহিলেন,
“তুমি যে আমার উপকার করিয়াছ কি না তাহা