পাতা:কপালকুণ্ডলা (দ্বিতীয় সংস্করণ).pdf/২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২০
কপালকুণ্ডলা।

দিবে না? বিশেষ যতদূর দেখা গিয়াছে ততদূর কাপালিক তাঁহার প্রতি কোন শঙ্কাসূচক আচরণ করে নাই—কেনই বা তবে তিনি ভীত হয়েন? এ দিকে কাপালিক তাঁহাকে পুনঃ সাক্ষাৎ পর্য্যন্ত কুটীর ত্যাগ করিতে নিষেধ করিয়াছে, তাহার অবাধ্য হইলে বরং তাহার রোষোৎপত্তির সম্ভাবনা। নবকুমার শ্রুত ছিলেন যে কাপালিকেরা মন্ত্রবলে অসাধ্য সাধনে সক্ষম—একারণে তাহার অবাধ্য হওয়া অনুচিত। ইত্যাদি বিবেচনা করিয়া নবকুমার আপাততঃ কুটীর মধ্যে অবস্থান করাই স্থির করিলেন।

 কিন্তু ক্রমে বেলা অপরাহ্ণ হইয়া আসিল, তথাপি কাপালিক প্রত্যাগমন করিল না। পূর্ব্বদিনে প্রায়োপবাস, অদ্য এ পর্য্যন্ত অনশন, ইহাতে ক্ষুধা প্রবল হইয়া উঠিল। কুটীর মধ্যে যে অল্প পরিমাণ ফল-মূল ছিল তাহা পূর্ব্ব রাত্রেই ভুক্ত হইয়াছিল—এক্ষণে কুটীর ত্যাগ করিয়া ফলমূলান্বেষণ না করিলে ক্ষুধায় প্রাণ যায় অল্প বেলা থাকিতে ক্ষুধার পীড়নে নবকুমার ফলান্বেষণে বাহির হইলেন।

 নবকুমার ফলান্বেষণে নিকটস্থ বালুকাস্তূপ সকলের চারি দিকে পরিভ্রমণ করিতে লাগিলেন। যে দুই একটা গাছ বালুকায় জন্মিয়া থাকে, তাহার ফলাস্বাদন করিয়া দেখিলেন যে এক বৃক্ষের ফল বাদামের ন্যায় অতি সুস্বাদু। তদ্দ্বারা ক্ষুধা নিবৃত্ত করিলেন।

 কথিত বালুকাস্তূপশ্রেণী প্রস্থে অতি অল্প, অতএব