পাতা:কপালকুণ্ডলা (দ্বিতীয় সংস্করণ).pdf/৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৮
কপালকুণ্ডলা।

 “তাহাই হউক। কিন্তু তাঁহাকে ত্যাগ করিয়া যাইতে আমার মন সরিতেছে না। তিনি যে আমাকে এত দিন প্রতিপালন করিয়াছেন।”

 অধি। “কি জন্য প্রতিপালন করিয়াছেন তাহা জান না। স্ত্রীলোকের সতীত্ব নাশ না করিলে যে তান্ত্রিক সিদ্ধ হয় না তাহা তুমি জান না। আমিও তন্ত্রাদি পাঠ করিয়াছি। মা জগদম্বা জগতের মাতা। ইনি সতীর সতীত্ব—সতী প্রধানা। ইনি সতীত্বনাশ সংযুক্ত পূজা কখন গ্রহণ করেন না। এই জন্যই আমি মহাপুৰুষের অনভিমত সাধিতেছি। তুমি পলায়ন করিলে কদাপি কৃতঘ্ন হইবে না। কেবল এ পর্য্যন্ত সিদ্ধির সময় উপস্থিত হয় নাই বলিয়া তুমি রক্ষা পাইয়াছ। আজি তুমি যে কার্য্য করিয়াছ—তাহাতে প্রাণেরও আশঙ্কা। এই জন্য বলিতেছি পলায়ন কর। ভবানীরও এই আজ্ঞা। অতএব যাও। আমার এখানে রাখিবার উপায় থাকিলে রাখিতাম; কিন্তু সে ভরসা যে নাই তাহা ত জান।”

 কপা। “বিবাহই হউক।”

 এই বলিয়া উভয়ে মন্দির হইতে বহির্গত হইলেন। এক কক্ষ মধ্যে কপালকুণ্ডলাকে বসাইয়া অধিকারী নবকুমারের শয্যা সন্নিধানে গিয়া তাঁহার শিওরে বসিলেন। জিজ্ঞাসা করিলেন “মহাশয় নিদ্রিত কি?”

 নবকুমারের নিদ্রা যাইবার অবস্থা নহে। নিজ দশা ভাবিতেছিলেন। বলিলেন “আজ্ঞা না।”