পাতা:কপালকুণ্ডলা (দ্বিতীয় সংস্করণ).pdf/৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৪
কপালকুণ্ডলা।

যত্নে যে মৃণ্ময়ী উপক্বতা হয়েন নাই, ইহাতে কিঞ্চিৎ ক্ষুব্ধা হইলেন; কিছু, ৰুষ্টা হইলেন। কহিলেন, “এখন ফিরিয়া যাইবার উপায়?”

 মৃ। “উপায় নাই”  শ্যামা। “তবে করিবে কি?”  মৃ। “অধিকারী কহিতেন, “যথা নিযুক্তোস্মি তথা করোমি।” শ্যামা সুন্দরী মুখে কাপড় দিয়া হাসিয়া কহি লেন “যে আজ্ঞা ভট্টাচার্য্য মহাশয়! কি হইল?”

 মৃণ্ময়ী নিশ্বাস ত্যাগ করিয়া কহিলেন, “যাহা বিধাতা করাইবেন তাহাই করিব। যাহা কপালে আছে তাহাই ঘটিবে?”

 শ্যা। “কেন, কপালে আর কি আছে? কপালে সুখ আছে। তুমি দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেল কেন?”

 মৃণ্ময়ী কহিলেন, “শুন। যে দিন স্বামির সহিত যাত্রা করি, যাত্রাকালে আমি ভবানীর পায়ে ত্রিপত্র দিতে গেলাম। আমি মার পাদপদ্মে ত্রিপত্র না দিয়া কোন কর্ম্ম করিতাম না। যদি কর্ম্মে শুভ হইবার হইত, তবে মা ত্রিপত্র ধারণ করিতেন; যদি অমঙ্গল ঘটিবার সম্ভাবনা থাকিত, তবে ত্রিপত্র পড়িয়া যাইত। অপরিচিত ব্যক্তির সহিত অজ্ঞাত দেশে আসিতে শঙ্কা হইতে লাগিল। ভালমন্দ জানিতে মার কাছে গেলাম। ত্রিপত্র মা ধারণ করিলেন না—অতএব কপালে কি আছে জানি না।”

 মৃণ্ময়ী নীরব হইলেন। শ্যামাসুন্দরী শিহরিয়া উঠিলেন।

দ্বিতীয়ঃ খণ্ডঃ সমাপ্ত