পাতা:কপালকুণ্ডলা (দ্বিতীয় সংস্করণ).pdf/৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভূতপূর্ব্বে।
৭৭

যখন অসৎকর্ম্মে অন্তঃকরণ সুখী হইত, তখন অসৎকর্ম্ম করিতেন; যৌবন কালের মনোবৃত্তি দুর্দ্দম হইলে যে সকল দোষ জন্মে তাহা লুৎফ্-উন্নিসা সম্বন্ধে জন্মিল। তাঁহার পূর্ব্বস্বামী বর্ত্তমান;—ওমরাহেরা কেহ তাঁহাকে বিবাহ করিতে সম্মত হইলেন না। তিনিও বড় বিবাহের অনুরাগিনী হইলেন না। মনে মনে ভাবিতেন, কুসুমে কুসুমে বিহারিনী ভ্রমরীর পক্ষচ্ছেদ কেন করাইব? প্রথমে কাণাকাণি, শেষে কালিমাময় কলঙ্ক রটিল। তাঁহার পিতা বিরক্ত হইয়া তাঁহাকে আপন গৃহ হইতে বহিষ্কৃত করিয়া দিলেন।

 লুৎফ্—উন্নিসা গোপনে যাহাদিগের কৃপাবিতরণ করিতেন, তন্মধ্যে যুবরাজ সেলিম এক জন। একজন ওমরাহের কুলকলঙ্ক জন্মাইলে, পাছে আপন অপক্ষপাতি পিতার কোপানলে পড়িতে হয়, এই আশঙ্কায় সেলিম এপর্যন্ত লুৎফ্-উন্নিসাকে আপন অবরোধ বাসিনী করিতে পারেন নাই। এক্ষণে সুযোগ পাইলেন। রাজপুতপতি মানসিংহের ভগিনী, যুবরাজের প্রধানা মহিষী ছিলেন। যুবরাজ লুৎফ্-উন্নিসাকে তাঁহার প্রধান সহচরী করিলেন। লুৎফ্-উন্নিসা প্রকাশ্যে বেগমের সখী, পরোক্ষে যুবরাজের উপপত্নী হইলেন।

 লুৎফ্-উন্নিসার ন্যায় বুদ্ধিমতী মহিলা যে অল্পদিনেই রাজকুমারের হৃদয়াধিকার করিবেন, ইহা সহজেই উপলদ্ধি হইতে পারে। সেলিমের চিত্তে তাঁহার প্রভুত্ব এরূপ প্রতিযোগশূন্য হইয়া উঠিল যে লুৎফ্-উন্নিসা উপ-