পাতা:কপালকুণ্ডলা (দ্বিতীয় সংস্করণ).pdf/৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮০
কপালকুণ্ডলা।

পুনৰুত্থাপিত হইল না, কিন্তু কেহই একথা ভুলিলেন না। স্বামির পরিবর্ত্তে পুত্র যে সিংহাসনারোহণ করেন ইহা বেগমের অনভিমত নহে; মেহের-উন্নিসার প্রতি সেলিমের অনুরাগ লুৎফ্-উন্নিসার যেরূপ হৃদয়শেল, বেগমেরও সেইরূপ। মানসিংহের ভগিনী আধুনিক তুর্কমান কন্যার যে আজ্ঞানুবর্ত্তিনী হইয়া থাকিবেন, তাহা ভাল লাগিবে কেন? লুৎফ্-উন্নিসারও এ সঙ্কল্পে উদ্‌যোগিনী হইবার গাঢ় তাৎপর্য ছিল। অন্যদিন পুনর্ব্বার এ প্রসঙ্গ উত্থাপিত হইল। উভয়ের মত স্থির হইল।

 সেলিমকে ত্যাগ করিয়া খস্রুকে আকবরের সিংহাসনে স্থাপিত কর। অসম্ভাবনীয় বলিয়া বোধ হইবার কোন কারণ ছিল না। এ কথা লুৎফ্-উন্নিসা বেগমের বিলক্ষণ হৃদয়ঙ্গম করাইলেন। তিনি কহিলেন, “মোগলের সাম্রাজ্য রাজপুতের বাহুবলে স্থাপিত রহিয়াছে; সেই রাজপুত জাতির চূড়া রাজা মানসিংহ; তিনি খস্রুর মাতুল; আর মুসলমানদিগের প্রধান খাঁ আজিম; তিনি প্রধান রাজমন্ত্রী; তিনি খস্রুর শ্বশুর; ইহারা দুইজনে উদ্যোগী হইলে, কে ইহাঁদিগের অনুবর্তী না হইবে? আর কাহার বলেই বা যুবরাজ সিংহাসন গ্রহণ করিবেন? রাজা মানসিংহকে এ কার্যে ব্রতী করা, আপনার ভার। খাঁ আজিম ও অন্যান্য মহম্মদীয় ওমরাহগণকে লিপ্ত করা আমার ভার। আপনার আশীর্ব্বাদে কৃতকার্য্য হইব, কিন্তু এক আশঙ্কা, পাছে সিংহা-