পাতা:কপালকুণ্ডলা (দ্বিতীয় সংস্করণ).pdf/৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভূতপূর্ব্বে।
৮১

সন আরোহণ করিয়া খস্রু এ দুশ্চারিণীকে পুরবহিষ্কৃত করিয়া দেন?”

 বেগম সহচরীর অভিপ্রায় বুঝিলেন। হাসিয়া কহিলেন, “তুমি আগ্রার যে ওমরাহের গৃহিণী হইতে চাও, সেই তোমার পাণি গ্রহণ করিবে। তোমার স্বামী পঞ্জ হাজারি মন্সরদার হইবেন।”

 লুৎফ্-উন্নিসা সন্তুষ্ট হইলেন। ইহাই তাঁহার উদ্দেশ্য ছিল। যদি রাজপুরী মধ্যে সামান্যাপুরস্ত্রী হইয়া থাকিতে হইল, তবে প্রতিপুষ্পবিহারিণী মধুকরীর পক্ষচ্ছেদ করিয়া কি সুখ হইল? যদি স্বাধীনতা ত্যাগ করিতে হইল, তবে বাল্যসখী মেহেরউন্নিসার দাসীত্বে কি সুখ? তাহার অপেক্ষা কোন প্রধান রাজপুরুষের সর্ব্বময়ী ঘরণী হওয়া গৌরবের বিষয়।

 শুধু এই লোভে লুৎফ্-উন্নিসা এ কর্ম্মে প্রবৃত্ত হইলেন না। সেলিম যে তাঁহাকে উপেক্ষা করিয়া মেহের-উন্নিসার জন্য এত ব্যস্ত, ইহার প্রতিশোধও তাঁহার উদ্দেশ্য।

 খা আজিম প্রভৃতি আগ্রা দিল্লীর ওমরাহেরা লুৎফ্-উন্নিসার বিলক্ষণ বাধ্য ছিলেন। অনেকেই পূর্ব্বকালে লুৎফ্-উন্নিসার প্রণয় ভাগী ছিলেন। খাঁ আজিম যে জামাতার ইষ্ট সাধনে উদ্যুক্ত হইবেন, ইহা বিচিত্র নহে। তিনি এবং আর আর ওমরাহগণ সম্মত হইলেন। খাঁ আজিম লুৎফ-উন্নিসাকে কহিলেন, “মনে কর যদি কোন অসুযোগে আমরা কৃতকার্য্য না হই, তবে তোমার