পাতা:কপালকুণ্ডলা (দ্বিতীয় সংস্করণ).pdf/৮৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পথান্তরে।
৮৩

লুৎফ্-উন্নিসা বৰ্দ্ধমানাভিমুখে যাত্রা করিলেন, সে দিন তিনি বর্দ্ধমান পর্যন্ত যাইতে পারিলেন না। অন্য চটীতে রহিলেন। সন্ধ্যার সময়ে পেষ্‌মনের সহিত একত্রে বসিয়া কথোপকথন হইতেছিল, এমত কালে মতি সহসা পেষ্‌মনকে জিজ্ঞাসা করিলেন,

 “পেষ্‌মন! আমার স্বামীকে কেমন দেখিলে?”

 পেষ্‌মন্, কিছু বিস্মিত হইয়া কহিল, “কেমন আর দেখিব?” মতি কহিলেন “সুন্দর পুৰুষ বটে কি না?”

 নবকুমারের প্রতি পেষ্‌মনের বিশেষ বিরাগ জন্মিয়াছিল। যে অলঙ্কার গুলিন মতি কপালকুণ্ডলাকে দিয়াছিলেন, তৎপ্রতি পেষ্‌মনের বিশেষ লোভ ছিল; মনে মনে ভরসা ছিল এক দিন চাহিয়া লইবেন। সেই আশা নির্মূল হইয়াছিল, সুতরাং কপালকুণ্ডলা এবং তাঁহার স্বামী উভয়ের প্রতি তাঁহার দারুণ বিরক্তি। অতএব কামিনীর প্রশ্নে উত্তর করিলেন,

 “দরিদ্র ব্রাহ্মণ আবার সুন্দর কুৎসিত কি?”

 মতি সহচরীর মনের ভাব বুঝিয়া হাস্য করিলেন, "দরিদ্র ব্রাহ্মণ যদি ওমরাহ হয়, তবে সুন্দর পুৰুষ হইবে কি না?”

 পে। “সে আবার কি?”

 মতি। “কেন, তুমি কি জান না যে বেগম স্বীকার করিয়াছেন, যে খস্রু বাদশাহ হইলে আমার স্বামী ওমরাহ হইবে?”