পাতা:কপালকুণ্ডলা (দ্বিতীয় সংস্করণ).pdf/৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পথান্তরে।
৮৫

 পুরস্কার পূর্ব্বক দূতকে বিদায় করিয়া মতি, পেষ্‌মনকে পত্র শুনাইলেন। পেষ্‌মন্ কহিল,

 “এক্ষণে উপায়?”

 মতি। “এখন আর উপায় নাই।”

 পে। (ক্ষণেক চিন্তা করিয়া) “ভাল ক্ষতিই কি? যেমন ছিলে, তেমনিই থাকিবে, মোগল বাদশাহের পুরস্ত্রী মাত্রেই অন্য রাজ্যের পাটরাণী অপেক্ষা ও বড়।

 মতি। (ঈষৎ হাসিয়া) “তাহা আর হয় না। আর সে রাজপুরে থাকিতে পারিব না। শীঘ্রই মেহের-উন্নিসার সহিত জাঁহাগীরের বিবাহ হইবে। মেহের-উন্নিসাকে আমি কিশোর বয়োবধি ভাল জানি; একবার সে পুরবাসিনী হইলে সেই বাদশাহ হইবে; জাঁহাগীর বাদশাহ নাম মাত্র থাকিবে। আমি যে তাহার সিংহাসনারোহণের পথরোধের চেষ্টা পাইয়াছিলাম, ইহা তাহার অবিদিত থাকিবে না। তখন আমার দশা কি হইবে?”

 পেষ্‌মন্ প্রায় রোদনোম্মুখী হইয়া কহিল, “তবে কি হইবে?”

 মতি কহিলেন, “এক ভরসা আছে। মেহের-উন্নিসার চিত্ত জাঁহাগীরের প্রতি কিরূপ? তাহার যেরূপ দার্ঢ্য তাহাতে যদি সে জাঁহাগীরের প্রতি অনুরাগিণী না হইয়া স্বামীর প্রতি যথার্থ স্নেহশালিনী হইয়া থাকে, তবে জাঁহাগীর শত শের আফগান বধ করিলেও, মেহের-উন্নিসাকে পাইবেন না। আর যদি