পাতা:কবিকঙ্কণ-চণ্ডী (প্রথম ভাগ) - চারুচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কবিকঙ্কণ-চণ্ডী বিদ্যা, ত্ৰিগুণ, ত্ৰিবৰ্গ, ত্ৰিলোক, ত্রিকাল, ত্ৰিমূৰ্ত্তি, সবেতেই ত্রিত্ব। এই ত্ৰিত্ববাদের অপর ফল-বুদ্ধ ধৰ্ম্ম সত্তৰ । দেবতা যদি আসিলেন তবে তার সঙ্গে সঙ্গে দেবশক্তিরও আমদানী হইল। এই মহাযান মত ভোট সিকিম তিব্বতে গিয়া মোঙ্গল-প্রভাবে বৌদ্ধ-তন্ত্র সৃষ্টি করিল। এই মোঙ্গলা-প্রভাবে ধন্ম মাঙ্গল দেশে স্ত্রীমূৰ্ত্তি ধারণ করিলেন; অবলোকিতেশ্বর জাপানে স্ত্রীমূৰ্ত্তিতে পূজা পাইতে লাগিলেন। প্ৰধান বৌদ্ধ-তন্ত্রের * প্ৰধান দেবী তারা হিন্দুতন্ত্রে প্রবেশ করিলেন এবং যন্ত্র মন্ত্র আঁক জোক তুক তাক ও নানা অসভ্য জাতির ভূতপ্ৰেত উভয় তন্ত্রকে ভরিয়া তুলিয়া তান্ত্রিাকদিগকে অনাবশ্যক ভয়ে সন্ত্রস্ত করিয়া তুলিল। মহাযান-সম্প্রদায়ভুক্ত মাধ্যমিক পন্থাদিগেব বিজযাস-সম্প্রদায় নানা দেবদেবীর সৃষ্টি করিয়াছিলেন। ইহাবই অন্য শাখা মন্ত্রযান । ধারণী নামক শাস্ত্ৰগ্ৰন্থ পুরাতন হইয়া অবোধ্য হইলে এরা সেই অবোধ্য শব্দ গুলিকে মন্ত্র কবিয়া তাতে শক্তি আরোপ করেন। বৌদ্ধধৰ্ম্মের পরাভবের পাব যখন আবাব হিন্দুধন্মের অভু্যদয় হইল, তখন বৌদ্ধর যেমন হিন্দু অহিন্দু বহু দেবদেবী আত্মসাৎ কবিয়াছিল, তেমনি হিন্দুরাও বহু দেবদেবী বেমালুম আত্মসাৎ কবিয়া ফেলিল-বুদ্ধ ধৰ্ম্ম সঙ্ঘ হইলেন জগন্নাথ সুভদ্রা বলরাম ; বুদ্ধস্থি হইল বিষ্ণুপঞ্জব ; বৌদ্ধ যন্ত্র-চিহ্নগুলি হইল জগন্নাথ সুভদ্রা বলরামের মুখ চোখ "াক ; বুদ্ধপদ হইল বিষ্ণুপদ।। শঙ্কবাচাৰ্য্য প্রভৃতিব নিগুণ ব্ৰহ্মবাদকে শাস্ত্রীয় করিবার জন্য যখন পৌরাণিক স্তবে বসাইয়া শিবকে সমাধিস্থ বুদ্ধতুল্য করিয়া তোলা হইল, তখন সাধারণ লোকের মনু সুখ-দুঃখের সমভাগ আশ্রয়দাতা ও নিগ্ৰহ-অনুগ্ৰহসমর্থ প্ৰত্যক্ষ ব্যক্তিত্বসম্পন্ন দেবতাব জন্য আগ্ৰহান্বিত হইয়া উঠিল। এমন অবস্থায় শক্তি তন্ত্র লোকের মনে বদ্ধমূল হইবাব খুব সহজ সুযোগ পাইয়াছিল। এই ভাবকে সাহায্য করিয়াছিল মুসলমানদেব প্ৰত্যক্ষ-দৃষ্ট শক্তি, এবং সেই শক্তি তারা দেবতাব দোহাই দিয়া লোককে ভালো করিয়াই সমঝোইয়া দিতেছিল। বঙ্গদেশের সংলগ্ন নেপাল সিকিম ভোট হইতে বৌদ্ধ তান্ত্রিকেবা আসিয়া বঙ্গে তান্ত্রিকতা প্রচার করেন। এই তান্ত্রিকতার স্রোত যে তিব্বত প্ৰভৃতি মোঙ্গল দেশ হইতে আগত তার একটি উপাখ্যান বহু তন্ত্রে আছে, যথা, রুদ্রযামলতন্ত্র, ব্ৰহ্মযামলতন্ত্র, মহাপ্ৰাচীনাচার্যতন্ত্র, ইত্যাদি। উপাখ্যানটি এষ্ট -বশিষ্ঠ পিতা ব্ৰহ্মার উপদেশে দেবী বুদ্ধেশ্বরীর সাধন করিতে কামাখ্যা পৰ্ব্বতে যান। তিনি বহুকাল তপস্যা করিয়াও দেবীর সাক্ষাৎকার পাইলেন না। তখন ক্রুদ্ধ হইয়া বশিষ্ঠ দেবীকে শাপ দিতে উদ্যত হইলেন । তখন দেবী আবিভূতি হইয়া বলিলেন বশিষ্ঠ সম্পূর্ণ ভ্ৰান্ত পথে সাধনা করিতেছেন; বেদাচারে দেবীর সাধনা হয় না, ঐ সাধনার উপায় মহাচীন ( তিব্বত ) দেশে পরিজ্ঞাত আছে। বশিষ্ঠ যদি মহাচীনে গিয়া বিষ্ণুর অবতার বুদ্ধদেবের পরামর্শ গ্ৰহণ করেন তবে তার