পাতা:কবিতাসংগ্রহ ১ - তপোধীর ভট্টাচার্য.pdf/১২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।


সবশেষে পড়ে থাকে নাভিপিণ্ড, নিরাকার ছাই
শ্মশানবন্ধুরা সব জানে
মাটিতে মিশিয়ে দেয় দ্রুত অবাস্তব অনুষঙ্গ যত
ঘড়া-ঘড়া জল ঢেলে ধুয়ে দেয়
চিতা-অবশেষ, দার্শনিক শঙ্করের ভাষ্য দিয়ে বলে
সব কাজ প্রথামতো করো!

মাটির কলস ঠুনকো হাতে ভেঙে দিয়ে কাঁধে রাখে
সামাজিক হাত, বিজ্ঞ উচ্চারণে
শেখায় অভ্যাসের গাথা: শেকড়ের ঋণ ভুলে যাও
দ্যাখো না পেছন-ফিরে

পড়ে রইল চাঁদের কপালে চাঁদ টিপ দিয়ে যাওয়ার
শৈশব, কৈশোরের ছায়াতরু
পড়ে রইল কুয়াশা-সরানো রোদে সহজ মায়ার
আঁকিবুকি, দুধের সরের মতো স্মৃতি

নিভে গেছে চিতা, তবুও আগুন জ্বলে
পল-অনুপল

কোলাহল শেষ করে উঠে যায় রুদালিরা
অশ্রুহীন চোখ মুছে নিয়ে
নির্বোধ আঙুল শুধু ছুঁতে চায় মায়ের চিবুক
কপালের ভাজ, অপার্থিব হাসি
নোলকের মতো তিল ছুঁয়ে ভাবি, একবার
এ আঙুল যদি হত ঘুম-ভাঙানিয়া
সোনার কাঠির মতো, প্রিয় তিলে চুমু খাই
যদি ভাঙে নিদালির ঘোর
তবু জাগে না জাগে না স্থির আঁখিতারা

মায়ের ঠোঁটের কোনে হাসির উদ্ভাস, তবু
একে কেউ বলে না বাস্তব
শবাধারে গাঢ়তর হয় শুধু মৃত্যুর হিমানি

১১৯