পাতা:কবিতাসংগ্রহ ১ - তপোধীর ভট্টাচার্য.pdf/২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

একা

একা এত একা নয় যতটুকু ওরা ভেবেছিল
একা বোঝে অস্নাবির ঘ্রাণ
কত যন্ত্রণা-বিধুর, কত ভুল প্রতিদিন কত ব্যর্থ।
প্রতিরাত, একা জানে আর্তি কত
পারম্পর্যহীন, কেন ফুটে ওঠে বিস্মৃতির ছবি
প্রতিদিন, শুধু বোঝে
দিনের তমসা এত রুগ্ন নয় যতটুকু ওরা ভেবেছিল

রাত তাকে দিয়েছিল অতন্দ্র পিপাসা
দিয়েছিল ঋণ, আনখ-বেদনা
দিন থেকে দিনাত্তরে কেন ফুটে ওঠে
সেই গাঢ় সূচিকাভরণ, একা জানে
কত যন্ত্রণাবিধুর সেই অস্নাবির ঘ্রাণ
একা বোঝে কেন ঋণ বাড়ে, কেন ব্যর্থ প্রতিরাত
আনে লুব্ধ কালকূট, শুধু জানে
রাতের তমসা এত রুগ্ন নয় যতটুকু ওরা ভেবেছিল

একা এত একা নয় যতটুকু ওরা ভেবেছিল


গাছবিষয়ক

গাছের সংসারে ছিল কাঁচাখেকো রোদ— ছিল ফুল, ছিল
বীজ, পাখিটির ছায়া— দ্রাবিড় বনানী থেকে
উড়ে এসেছিল তোটকের ঘ্রাণ, কুঁড়িটির হাসি গাছ
শিখে নিয়েছিল— সমর্পণে, মৌন অভিমানে
বাম্পাবলী শুষে নিয়েছিল, লাবণ্যের খুব কাছাকাছি গিয়ে
ফেটে পড়েছিল একা-একা— কোথাও পাখির
শব্দ নেই শুধু তার ছায়া পড়ে আছে গাছের শরীরে, বীজে—
বুঝি কোনো গোপন আহ্বাদে ফুটেছিল
গৌতম বুদ্ধের চোখ তার সূচীবিদ্ধ ফুলে, ধীরে-ধীরে
কুঁড়িটির হাসি পাতার আড়ালে
ন’লক্ষ কুসুম হয়ে ফোটে— শুধু সমর্পণে শুষে নিয়ে
গাঢ় হাহাকার
গাছের সংসার জুড়ে শুয়ে থাকে কাঁচাখেকো রোদ।

২৩