পাতা:কবিতাসংগ্রহ ১ - তপোধীর ভট্টাচার্য.pdf/৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

বেহুলা

লোহার বাসর ছিল তবুও তো ছিদ্রপথে
নাগিনী ঢুকেছে
বেহুলার কাল-নিশি আধো ঘুম তন্দ্রায় কেটেছে
লখিন্দর নীল হলো মনসার শাপে
গাঙুরের ঘোলা জলে অভাগীর মান্দাস ভেসেছে।

পারাপার নেই এই স্রোতে, স্বপ্নের ছলনা নিয়ে
সারারাত কেটে গেছে সই
অস্থি মজ্জা মাংস ও শাণিত যৌবনের সঙ্গে গেছে।
ধাবমান মকরের গ্রাসে
হেঁতালের লাঠি ছিল, সপ্তডিঙা মধুকর, তবুও মান্দাস—
নদী শুধু ভাটিয়াল বয়

বাঁপাশে নেতার পাট, ডানদিকে বাঘের হংকার
নষ্টবেলা এখনো কাটে নি
স্রোত নয় কালনাগিনীর পথরেখা— মান্দাসে বেহুলা
একাকী শিহরিত হয়, স্বপ্নের ভনিতা নিয়ে
নদী আজও ভাটিয়াল বয়

পার ভাঙে, গোদাদের ঘাটে ছোবল গুটিয়ে ভয়
এখনো রয়েছে।
সামাললা সামালো সই; এত ভয়ের কুহরে
বুঝি বা ফোটে না ধান সিজান অঙ্কুরে

নিছনি নগর কান্দে, আর কান্দে
অমলা বেন্যানী
বাহুড়িয়া আসে না রে বেহুলা বহিনী
অবসন্ন পথে তার রোদের উদ্ভাস থেকে
ঝলকে ঝলকে ওঠে বিষ
কূলে দাণ্ডাইয়া ভাই মিথ্যে কান্দ কেনি

গাঙুরের ঘোলা জলে নষ্ট যৌবনের
মান্দাস ভেসেছে
বেহুলার কাল-নিশি ঘনঘোর
নিদানে কেটেছে

৩৪