পাতা:কমলাকান্ত - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/২১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৯৬
কমলাকাস্তের দপ্তর।

আমি যত পাখা ঘুরাইয়া বায়ু সৃষ্টি করিয়। ভ‍্রমরকে উড়াইতে লাগিলাম, ততই সে দুরাত্মা ঘূরিয়া ঘূরিয়া আমার মাথামুণ্ড বেড়িয়া বেড়িয়া চোঁ বোঁ করিতে লাগিল। কখনও সে আমার বস্ত্রমধ্যে লুক্কায়িত হইয়া, মেঘের আড়াল হইতে ইন্দ্রজিতের ন্যায় রণ করিতে লাগিল, কখনও কুম্ভকর্ণনিপাতী রামসৈন্যের ন্যায় আমার বগলের নীচে দিয়া ছুটিয়া বাহির হইতে লাগিল; কখনও স্যাম্পসনের ন্যায় শিরোরূহমধ্যে আমার বীর্ষ্য সংন্যস্ত মনে করিয়া, আমার নীরদ-নিন্দিত কুঞ্চিত কেশদামমধ্যে প্রবেশ করিয়া ভেরী বাজাইতে লাগিল। তখন দংশনভয়ে অস্থির হইয়া আমি রণে ভঙ্গ দিলাম। ভ্রমর সঙ্গে সঙ্গে ছুটিল। সেই সময়ে চৌকাঠ পায়ে বাধিয়া কমলাকান্ত— “পপাত ধরণীতলে!!!” এই সংসারসমরে মহারথী শ্রীকমলাকান্ত চক্রবর্তী—যিনি দারিদ্র্য, চির-কৌমার এবং অহিফেন প্রভৃতির দ্বারাও কখন পরাজিত হয়েন নাই—হায়! তিনি এই ক্ষুদ্র পতঙ্গ কর্ত্ত‌ৃক পরাজিত হইলেন।

 তখন ধূল্যবলুষ্ঠিত শরীরে দ্বিরেফরাজের