পাতা:কমলা - আশুতোষ ভট্টাচার্য্য.pdf/১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কমলা বাড়ীতে ঘটক আসিলেই কমলা সরিয়া যায়। কখন হয় তা বা সে সুবিধা হয় না ; তাহাতে দুই চারিটিা পাত্রের কথা তাহার কাণে উঠিয়া থাকে। কিন্তু মেঘ চলিয়া গেলে যেমন আকাশের গায়ে দাগ থাকে না, এই সব পাত্রের কথাও তেমনি তাহার মনে অঙ্কপাত করিতে পারে না। এক দিনের একটা কথা শুধু সে ভুলিতে পারে নাই। সে পাত্রটির নাম বিরাজমোহন । এই নামটা মনে হইলেই কে যেন তাহার নবনীতাভ গণ্ডে সিন্দুর ঢালিয়া দেয়। বিরলে বসিলেই তাহার মন সেই ঘটক বর্ণিত মুক্তিটিকে গড়িয়া তুলিতে চেষ্টা করে। পূর্বে সে যাহার যত রূপ দেখিয়াছে-যাহার যত গুণের কথা শুনিয়াছে, সব আসিয়া এই মূৰ্ত্তিকল্পনাকল্পে যোগদান করে। কেহ আসিয়া পড়িলেই সে অৰ্দ্ধগঠিত মুক্তি ভাঙ্গিয়া যায়। লজ্জায় তাহার মুখখানি নত হইয়া পড়ে। আরক্ত কপোল দুইখানিকে সে তাড়াতাড়ি লুকাইয়া ফেলিতে চেষ্টা করে। তাহার এ লুকান চিন্তার কথা কেহ জানিত না। সে নিজেই বুঝিত না, ইহা কি—অনুরাগ অথবা পূৰ্ব্বারাগা ; তবে হিন্দুর কুমারীকে যে এভাবের কোন কথা মনে করিতে নাই, অভিভাবক তাহাকে যাহার করে সম্প্রদান করেন—সে নিগুণ বা নিধন হউক, মুখ অথবা কুৎসিত হউক।--তাহাকেই দেবতা ভাবিয়া হৃদয়ের সমস্ত ভক্তি-ভালবাসা অর্পণ করিতে হয়, আর বিবাহের পূৰ্ব্বে যদি কাহাকেও মনে ধরিয়া থাকে তাহার স্মৃতিটিকে পৰ্যন্ত মন হইতে মুছিয়া ফেলিতে হয়, পড়িয়া শুনিয়া সেটা তাহার ধারণা হইয়াছিল। তাহাতেই এ চিন্তাটাকে সে মন হই ও সরাইয়া ফেলিতে চেষ্টা করে, কিন্তু তাহার মন তাহা কিছুতেই। ছাড়িতে চাচ্ছে না। যাহার সঙ্গে তাঁহাদের কোন সম্বন্ধ নাই, সে অজ্ঞাত । ও অদৃষ্ট যুবার চিন্তা তাহার মনের এতু প্রিয় কেন তাহাও সে ঠিক ? 8)