পাতা:কমলা - আশুতোষ ভট্টাচার্য্য.pdf/১৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আরকিসে কিসে কমলার সম্বন্ধ আছে, আর কি কি ধবংস করিতে হইবে। ভাল করিয়া দেখিয়া যখন বুঝিল যে, সে-ঘর হইতে কমলার স্মৃতি মুছিয়া ফেলিবার উপায় নাই, তাহার প্রত্যেক বস্তুতে, প্ৰত্যেক । বস্তুর বিন্যাসে পৰ্য্যন্ত কমলার কিছু না-কিছু সংস্রব আছে,-সে-ঘর কমলাময়, তখন সে ঘূণায় তাহা ছাড়িয়া বৈঠকখানায় আসিয়া শয়ন করিল। জাগরণ ও চিন্তায় রাত্রি অতিবাহিত হইল। উষার আলোকরেখা দেখিতে পাইয়াই বিরাজ শয্যা ত্যাগ করিল। বিবরে অগ্নি প্রদত্ত হইলে সর্প যেমন বেগে বাহিরে পলাইয়া যায়, সেও সেই ভাবে ঘর ছাড়িয়া প্ৰভাতের শীতল মুক্ত বায়ুতে অন্তস্তাপ জুড়াইবার ইচ্ছায় গঙ্গাতীরাভিমুখে ধাবিত হইল। আগুন যাহার ঘরে, সে বাহিরে গিয়া জুড়াইতে পারে ; কিন্তু আগুন যাহার অন্তরে, সে কোথায় গিয়া নিবৃতি লাভ করিবে ? পুরাঙ্গনার স্নান করিতে চলিয়াছে, কেহ কেহ স্নান করিয়া গৃহে ফিরিতেছে। বিরাজকে দেখিয়াই ঘোমটা টানিয়া দিয়া তাহারা পরস্পরে নিমস্বরে কথা কহিতে কহিতে চলিয়া গেল। বিরাজ মনে করিল, তাহারা কমলার পলায়নের কথাই কহিয়া গেল। কোন দুই জন বা তিন জনকে একত্র দাড়াইয়া কথা কহিতে দেখিলেই তাহার মনে হয়, তাহারা সেই কথারই জল্পনা করিতেছে। পথে যদি কেহ শুধু তাহার দিকে চাহিয়া দেখে, অমনি তাহার মনে হয় যে, তাহার সে দৃষ্টিতে একটা পরিহাস ও ব্যঙ্গ জড়িত রহিয়াছে। অধিক দূর আর তাহার যাওয়া ঘটিল না, অৰ্দ্ধপথ হইতে ফিরিয়া আসিয়া সে আবার ঘরের কোণেই আশ্রয় লইল । , . . . . ; পূৰ্ব্বাহে একজন চাকর একখানা পত্ৰ হাতে করিয়া বিরাজের দিকে আসিতেছিল, তাহার মনে হইল যে, চাকরিটা বড় ধীরে ধী। “১৩৪]