পাতা:কমলা - আশুতোষ ভট্টাচার্য্য.pdf/১৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্থির জলে আঘাত করিলে সমস্ত জলটাই একবারে চঞ্চল হইয়া উঠে না।” বটে, কিন্তু আহত স্থানে প্রথমেই যে একটা বৃত্তাকার ক্ষুদ্র তরঙ্গ উখিত হইয়া থাকে, তাহাই ক্রমে প্রসারিত হইয়া সংশ্লিষ্ট সমগ্ৰ জলরাশিকেই পরে পরে চঞ্চল করিয়া তুলে। কাহারও সুখের শান্তভাব ভাঙ্গিয়া দিলেও ‘’ যেন সেই রকমের একটা প্রসারণশীল চঞ্চলতার সৃষ্টি হইয়া থাকে। তাহাতেও অনেক সময়ে একটি আহত হৃদয়ের বেদনা ও আকুলভা ক্ৰমে ক্রমে বিস্তৃতি লাভ করিয়া তাহার সহিত মিত্র অথবা শত্রুভাবেও ’ যাহারা সংশ্লিষ্ট তাহাদিগকে একে একে চঞ্চল করিয়া থাকে। হীরালালের বৈরশোধ সম্পূর্ণ হইল। নীলকমলের সংসার শ্ৰীভ্রষ্ট, ভ্রাতুষ্পপুত্ৰ গৃহসংত্যক্ত, পুত্রবধু প্ৰবাদকলঙ্কিত,-অজ্ঞাতবাসে চিরনির্বাসিত, পুত্ৰ, উদভ্ৰান্ত,-কোন কাৰ্য্যে মন স্থির করিতে পারে। না, কোথাও দুই দিন স্থির থাকিতে পারে না,-আজি গৃহে, কাল কলিকাতায়, পরশ্ব ভিন্ন স্থানে। কৰ্ত্তা ও গৃহিণীতেও মনের মিল নাই । আর সংসারে আছে কি ? অর্থ ? যে অর্থ সুখ দান করিতে পারে না তাহার সার্থকতা কি ? বৈরশোধের তৃপ্তিটা কিন্তু, হীরালালকে অধিক দিন আনন্দ দিতে পারিল না। পরকে দুঃখ দিয়া সে যেটুকু তৃপ্তি পাইল, তাহ অচিরেই তাহার মনে শুধু একটা বেদনা। রাখিয়া চলিয়া গেল । [२७१ः