পাতা:কমলা - আশুতোষ ভট্টাচার্য্য.pdf/১৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কমল৷ কালো কাপড়খানি চাকরীদের নেকড়া করিতে দিয়াছিল সেইখানি আবার তাহাকে পরিতে হইল। তাহার নিজের বলিতে আর কিছুই ছিল না ; সেই এক বস্ত্রে তখনই তাহাকে সে গৃহ ত্যাগ করিতে হইল। পথে বাহির হইয়া হীরালাল দেখিল, তাহার গায়ে জামা নাই, শীতবস্ত্ৰ নাই, পায়ে জুতা নাই। কোঁচার কাপড়টি খুলিয়া তাহাতেই গা মাথা ও মুখ বেশ করিয়া ঢাকিয়া, পাছে কোন জানাশুনা লোকের সঙ্গে দেখা ঠাইয়া পড়ে এই আশঙ্কায় পাশ্বে পশ্চাতে বা সম্মুখে কোন দিকে না চাহিয়া ঘাড় গুজিয়া চলিতে আরম্ভ করিল ; কোথায় চলিয়াছে তাহার ঠিকানা নাই, কোন পথে চলিতেছে তাহার প্রতি লক্ষ্য নাই, কোন দিকে কোথায় যাইবে তাহারও ভাবনা নাই, সম্মুখে যে পথ পাইল তাহাতেই চলিতে লাগিল। w . হীরালাল চলিতে চলিতে মধ্যে একবার একটা বদ্ধগলিতে আসিয়া বাহির হইবার পথ না পাইয়া ফিরিয়া আসিতেছিল, এমন সময়ে তাহার সম্মুখে একটা লোক পড়িয়া গেল। লোকটার গা মাথা মুখ সব একখানা মোটা শীতের কাপড়ে ঢাকা ; চোখদুটি শুধু বাহিরে ছিল, তাহাও চশমায় ঢাকা! রাত্রিকালে শুধু চশমা-ঢাকা দুটি চােখ দেখিয়া মানুষটা কে আহ। সহজেই বুঝা যায় না ; কিন্তু সেই চশমা-ঢাকা চোখের উজ্জ্বল দৃষ্টটা ‘অ্যাদারের” আলোর মত যেমন একবার তাহার মুখের উপর পড়িল, হীরালাল অমনি শিহরিয়া উঠিল। সে আর পশ্চাতে না চাহিয়া কদমাক্ত পথে না ছুটয়া যন্ত দ্রুত চলিতে পারিল চলিয়া দুরে আসিয়া পড়িল । অনেকদূর আসিয়া হীরালাল সভয়ে একবার পশ্চাতে চাহিয়া দেখিল, কেহ নাই ; তখন সে একটু নিশ্চিন্তু হইয়া ধীরে ধীরে চলিতে আরম্ভ ।