পাতা:কমলা - আশুতোষ ভট্টাচার্য্য.pdf/১৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কমলা . . , a করিতে পারেন না। দুই চারিদিন চুল টানাটানি ছিড়াছিড়ির পর তিনি সে প্ৰযত্ন পরিত্যাগ করিলেন । কমলা পাণ খায় না । বামাসুন্দরী তাহার জন্য পাঁচ রকমের মসলা রাখিয়া দেন, কমলা তাহাও মুখে দেয় না ; তিনিই দোক্তাসম্বলিত তাম্বুলের সঙ্গে চর্বণ করিয়া সেগুলির সদ্ব্যবহার করেন। একদিন : তিনি যে কাগজে মুড়িয়া মসলা আনিয়া কমলার ঘরে রাখিয়া গেলেন, তাহার উপরে দৃষ্টি পড়িলে কমলা দেখিল, সেখানা”একখানা পুরাতন চিঠি। দুই চারিটা বর্ণে দৃষ্টি পড়িতেই সমস্তটা পড়িবার কৌতুহল হইল। কমলা পড়িয়া বুঝিল, সে পত্ৰখানা চূড়ামণি কবে বামাসুন্দরীকে লিখিয়াছিলেন। পত্রের মৰ্ম্ম এই যে,-নীলকমল কমলার খরচসম্বন্ধে এ, পৰ্যন্ত একটি পয়সাও দেন নাই,-বিরাজের খুব ঘটা করিয়া বিবাহ হইয়া গিয়াছে, কমলার উপরে বিরাজের বড়ই বিদ্বেষ ও ঘূণা,--তাহার লুকাইয়া চলিয়া আসাতে গ্রামে একটা কুৎসিত অপবাদ উঠিয়াছে,— তাহাকে যাবজীবন প্রবাসেই বাস করিতে হইবে, ইত্যাদি। ** ** পত্ৰখানা পড়িয়া কমলা গালে হাত দিয়া স্তৰূভাবে কিছুক্ষণ বসিয়া রহিল। বিরাজের বিবাহ হইয়াছে, এই সংবাদে তাহার একটু আনন্দ হইল বটে ; কিন্তু সে আনন্দন্টুকু, “গ্রামে অপবাদ’ ও ‘বিরাজের ঘুণা', এই দুইএর চিন্তায় তুষারসমুদ্রে বহ্নিকণার ন্যায় নিমেষে হারাইয়া গোল । এই দুইকঁ যে ঘটবে, তাহা সে পূর্বেই ভাবিয়াছিল; কিন্তু অবশ্যম্ভাবী অমঙ্গলেরও পূৰ্ব্বাশঙ্কণ অপেক্ষা সুচনা বা সঙ্ঘটনই কি অধিক উদ্বেগাবহ নহে? কমলা ভাবিতে “লাগিল, ভাবিতে ভাবিতে তাহার নয়নদ্বয় অশ্রুত পরিপ্লাত ইয়া উঠিল এবং দেখিতে দেখিতে দুইচক্ষু হইতে ’স্কার স্বর করিয়া অবিরল অশ্রুধারা বহিতে লাগিল । . . . . ১৯৩]