পাতা:কমলা - আশুতোষ ভট্টাচার্য্য.pdf/২০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

v) দিন চলিয়া গেল, কমলা খাইতে নামিয়া গেল না । সন্ধ্যা আসিল, বামাসুন্দরী ফিরিয়া আসিলেন না । রাত্ৰি বাড়িতে লাগিল, মহানগরীর জনকোলাহল ক্রমেই নীরব হইয়া আসিল, বামাসুন্দরী তখনওঁ ফিরিয়া আসিলেন না দেখিয়া কমলার মনে বড় ভয় হইল। সে মুক্ত বাতায়নের নিকটে আসিয়া বাহিরে চাহিয়া দাড়াইয়া রহিল। উপবাসক্ষিঃ দেহ তন্দ্রাবেশে অবশ হইয়া পড়িতেছিল, তথাপি সে শয়ন করিল না । যে কক্ষে সে বাস করিয়া থাকে তাহার দ্বার ভিতর হইতে রুদ্ধ করিবার কোন উপায় ছিল না । তেমন কক্ষে শয়ন করিয়া নিদ্রা যাইতেও আজ তাহার ভয় হইতেছিল ; অনেকক্ষণ দাড়াইয়া থাকিয়া কমলা সেই বাতায়নতলেই বসিয়া পড়িল এবং মাথাটি দেয়ালে ঠেকাইয়া চোখ বুজিয়া ভাবিতে লাগিল। এতদিন যে ষড়যন্ত্রের ছায়া দেখিয়া তাহার হৃদয় আশঙ্কায় কঁপিয়া উঠিতেছিল, আজ তাহা যেন মূৰ্ত্তিমান হইয়া তাহার চক্ষের সমক্ষে আসিয়া দাড়াইয়াছে। আসয় বিপদের একটা আতঙ্ক আসিয়া তাহার হৃদয়কে অবসন্ন করিয়া ফেলিতেছিল। সে ভাবিতেছিল,-“এ চক্রান্ত কাহার ?-বামার বা হরকুমারের, অথবা উভয়ের ?-চুড়ামণিও বোধ হয়। ইহাতে আছেন ;-শ্বশুরও আছেন কি ?”—এই কথাটা মনে হইতেই তাহার চক্ষে অশ্রুধারা বহিল। অশ্রু মুছিতে মুছিতে আবার ভাবিতে লাগিল,-“সংসার এমন কেন ? ধৰ্ম্মের পথেও পদে পদে এত বিপদ আসিয়া জড়ায় কেন ? একটা অনাথ অবলাকে দুঃখ দিবার জন্য চারিধান। হইতে এত চক্রান্ত কেন ? যাহার সুখ নাই, সুখের আশাও নাই, তাহ মরণ হয় না কেন ?”-আবার তাহার গণ্ডস্থল অশ্রুধারায় প্লাবিত হইল। Rewa,