পাতা:কমলা - আশুতোষ ভট্টাচার্য্য.pdf/২৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রাত্ৰিতে সে কাশীধামে উপস্থিত হয়, তাহারই উষায় বেড়াইতে বাহির হইয়া গঙ্গাতীরে কমলার সঙ্গে তাহার। অকস্মাৎ দেখা হইয়া যায়। কমলার চরিত্র ও অপবাদ সম্বন্ধে তাহার। তখনও যেটুকু সংশয় ছিল, তাহা কমলার মুখে হরদা”—শুনিয়াই স্থিরসিদ্ধান্তে পরিণত হইয়াছিল। সে সেই দিবসেই কলিকাতায় যাওয়ার সঙ্কল্প ও কাশীধাম ত্যাগ করিয়া আবার দেশে দেশে উদ্দেশ্যহীনভ্রমণে দিন কাটাইতেছিল। বায়ুসঞ্চালিত বিচ্ছিন্ন মেঘমালার মধ্যে চন্দ্রের ক্ষণিক প্রকাশে, পৃথিবীর বক্ষে যেমন একটা ক্ষণে ক্ষণে বিলীয়মান আলো ও ছায়া-পরম্পরার সঞ্চারিভাব লক্ষিত হইয়া থাকে, হরকুমারের প্রণয়াখ্যান শুনিবার পর হইতে বিরাজের মুখেও সেইরূপ একটা ভাব লক্ষিত হইতেছিল। এক একবার যখন তাঙ্গার মনে হইতেছিল, “হরকুমারের এ আবেগপূর্ণ আখ্যান কল্পিত হইতে পারে না, কমলা অবিশ্বাসিনী নহে,”—তাহার। মুখে একটা প্ৰফুল্লভাব আসিয়া পড়িতেছিল ; আবার পরীক্ষণেই যখন মনে করিতেছিল,-“তাহাই যদি হইবে তবে এতদিন সে এসব কথা পত্র লিখিয়া জানায় নাই কেন ?”—তাহার মুখখানা গভীর, আর যেন অন্ধকার হইয়া পড়িতেছিল। " বহুক্ষণ স্তব্ধভাবে, অধোবদনে বসিয়া থাকিয়া হরকুমার ধীরে ধীরে মাথা তুলিল এবং অনুতপ্ত অপরাধীর মত দীননেত্রে বিরাজের পানে চাহিয়া, তাহার হাত ধরিয়া বলিল,-“আমাকে ক্ষমা করুন। -আমি তখন মানুষই ছিলাম না। যে মানুষ সে পশুর উপরে রাগ করে না ।” বিরাজ মৃদু হাসিয়া বলিল, “আমার কাছে আপনার এ দীনতা কিসের জন্যে ? আমি আপনার ওপরে রাগ করি নি।--আপনি তা জানেন, সে স্ত্রীকে আমি পরিত্যাগ ক’রেছি?--তবে যা যা ব’ললেন এ সবই যদি ૨૨ •]