পাতা:কমলা - আশুতোষ ভট্টাচার্য্য.pdf/২৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কমলা কাত্যায়নী চলিয়া গেলে, নীলকমল একটু গভীরস্বরে বলিলেন, “তুমি । বুঝতে পারছি না, সুধাংশু !—সহসাই এখন কিছু করাটা ভাল হবে না।” সুধাংশু । আমি না হয় বুঝতেই পারছি না; কিন্তু আপনি একবার বুঝে দেখুন দেখি, সংসার কি ছিল--কি হ’য়েছে, আপনি কি ছিলেন—কি হ’য়ে- ছোন ! যে পুত্রভাগ্যের জন্যে সকলে আপনার ঈর্ষা ক’রত, সেই পুত্ৰ আজি আপনার অবাধ্য হ’য়ে, উদাসীনের মত পথে পথে ঘুরে বেড়াচ্ছেন!! আপনার যে পুত্রবধূকে সূৰ্য্য অবধিও দেখতে পেত না, তিনি কি না। আজ অনাথার মত পথে ঘাটে প’ড়ে থাকেন—পরের আশ্ৰয়ে, পরের অনুগ্রহের উপরে নির্ভর ক’রে, প্রবাসে দুঃখের জীবন যাপন ক’রছেন। এসব কেন, কার জন্যে।--তা কি আজও বুঝতে পারছেন না ? না—বুঝে আজ ও তার প্রতিকার ক’রতে যত্ন ক’রবেন না ? এখনও কি আপনি মনে ক’রেছেন, t আবার বিয়ে ক’রে সংসারী হবেন ? বউদিদি যদি মনের দুঃখে বিদেশেই প্রাণত্যাগ করেন, দাদা কি আর বাড়ীর দিকে মুখ ফেরাবেন ? বাড়ীতে ' কে থাকবে ? আপনার কত সাধের সাজান সংসার উচ্ছন্নে যেতে ব’সেছে ! আপনার এই এত যত্নের বাড়ীতে সন্ধ্যের দীপ জ্ব’লবে না।--ভূতের বাসা হ’য়ে পড়ে থাকবে ! ক’ত যত্নে যে বিষয় ক’রেছেন, তাও পরে ভোগ ক’রবে! এখনও উপায় আছে ;-আপনি ইচ্ছে ক’রলেই এখনও আবার সবই হয়—আরও কি আপনি উদাসীন থাকবেন ? নীলকমল পুনৰ্বার চাকরকে তামাকু দিতে বলিয়া সুধাংশুকে বলিলেন, “তুমি এখন ওপরে যাও! আমি একটু ভেবে দেখি-কি ক’রলে ভাল হয়।” সুধাংশু নীলকমলের পা দুইটিকে দুইহাতে জড়াইয়া ধরিয়া, দীনদৃষ্টিতে তাহার মুখের দিকে চাহিয়া বাষ্পজড়িত কাতরকণ্ঠে বলিল, “না-কাকাবাবু! ভেবে আর কি দেখবেন ? ভাববার আর কিছু নেই, আর তার [ ২৬৩