পাতা:কমলা - আশুতোষ ভট্টাচার্য্য.pdf/২৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কমলা সময়ও নেই। আমি বউদিদির যে অবস্থা দেখে এসেছি তাতে এতদিন তিনি বেঁচে আছেন কি না। তাই সংশয়!—কাকাবাবু! আমার এই অনুরোধটি রাখুন!! আপনার স্নেহে এতবড় হ’য়েছি, কখন কিছু চাই নি,-আর কখন কিছু চাইবও না ; আমার এই ভিক্ষেই শেষ—রাখুন!” । বাম্পাবেগে সুধাংশুর কণ্ঠরোধ হইল। নীলকমল চাহিয়া, দেখিলেন, তাহার আরক্ত নেত্ৰদ্ধয় হইতে অবিরল অশ্রু বিগলিত হইয়া গণ্ডস্থল প্লাবিত হইতেছে! শৈশবেও কখন যাহাকে কঁদিতে দেখেন নাই, তাহার এই অভূতপূৰ্ব্ব দুর্বলতা দেখিয়া তঁহার পাষাণ-প্ৰাণও বুঝি গল গল হইয়া উঠিল। অন্যদিকে চাহিয়া ভগ্নকণ্ঠে বলিলেন, “তবে রায়কে একবার ডেকে দাও!” রায়মহাশয় যৌবনের প্রারম্ভেই নীলকমলের সেরেস্তায় নকল-নবীস হইয়া প্ৰবেশ করেন। এখন তিনি বৃদ্ধ হইয়াছেন এবং প্রধান কৰ্ম্মচারীর পদ লাভ করিয়াছেন। তঁহার একটা নাম অবশ্যই ছিল, কিন্তু তাহার কোন ব্যবহার ছিল না ; আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা সকলের নিকটেই তিনি হয় ‘রায়মহাশয়” অথবা শুধু ‘রায়”। আমরা তাঁহাকে “রায়মহাশয়’ই বলিব । রায়মহাশয় আপনিই আপনার পরিচয় । বাড়ীর কথা কেহ জিজ্ঞাসা করিলে, তিনি এমন একটা স্থানের নাম করেন, যেখানে সকলকেই যাইতে হইবে অথচ কেহই যাইতে ইচ্ছা করে না । সন্তানাদির কথায় বলিয়া থাকেন-“অনেকগুলি”-কিন্তু বিবাহের কথায় বলেন- “হয় নিএইবার হবে” এবং সেই প্রসঙ্গে বাড়ীর নিকটের একটা মুড়া গাছেরও উল্লেখ করিয়া থাকেন। বেশ-বিন্যাসের দিকে তঁহার মোটেই দৃষ্টি নাই,- কখন ফরসা কাপড়ের উপরে ময়লা উড়নী, কখন ঠিক তাহার বিপরীত, ૨૭8 !