পাতা:কমলা - আশুতোষ ভট্টাচার্য্য.pdf/৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বা দূরে অন্ধকার ভিন্ন আর কিছুই দৃষ্টিগোচর হয় না-চারিদিকেই শুধু অন্ধকার জমাট বাধিয়া রহিয়াছে ! কমলা গঙ্গাতীরে- যে ঘাটে তাহারা স্নান করিত সেই ঘাটে উপস্থিত হইয়া দেখিল, শ্রাবণের নদী কুলে কুলে ফুলিয়া উঠিয়াছে। জনমানবের সমাগম-সম্ভাবনাও নাই-ডুবিয়া মরি বার এমন সুযোগ আর হয় না । যে কয়েকটা ধাপ জাগিয়াছিল। সে ধীরে ধীরে অতিক্ৰম করিতে লাগিল । সেই চিরপরিচিত ঘাটিও আজ তাহার পক্ষে যেন নূতন-প্ৰত্যেক ধাপ যেন জীবন ও মৃত্যুর এক একটা ব্যবধান! নিম্ন সোপানে পদার্পণ করিতেই একটা ঢেউ আসিয়া তাহার পায়ের উপরে আছাড় খাইয়া পড়িল। কমলা তাহাতে শিহরিয়া উঠিল-ইহা যেন মৃত্যুর তুষারাবৎ স্পর্শ ! এতিক্ষণ সে যেন স্বপ্নে পথ চলিয়া আসিয়াছিল-সে সে মরিতে আসিয়াছে একথা যেন তাহার মনেই ছিল না। এই তরঙ্গস্পশ সেই কথাটা তাহার স্মরণে আনিয়া দিল । সেই সঙ্গে তাহার মনে হইল, যাহারা তাহাকে ভালবাসে তাহাদের কাহারও সঙ্গে দেখা হইল নাতাহাদের কাঙ্গাকেও কোন কথা বলিয়া যাওয়া হইল না। এই চিন্তাটা তাহার চরণের গতি মন্থর করিয়া দিল। কমলা জানু পরিমিত জলে দাড়াইয়া ভাবিতে লাগিল । اس অঙ্গ ভরা রূপ, বুক ভরা ভালবাসা ও অতৃপ্ত আশা লইয়া, যৌবনে সংসার ছাড়িয়া যাইতে কে না ভাবে ? কিন্তু যে ভাবে সে কি আত্ম-নিধনের পথে অগ্রসর হইতে পারে ? এক চিন্তা অন্য সহস্ৰ চিন্তাকে ডাকিয়া আনে। মন চিন্তাজালে জড়িত হইয়া উদ্দেশ্য-সিদ্ধির পথে শীঘ্ৰ পীভ্র অগ্রসর হইতে পারে না-বিলম্ব করিয়া ফেলে। বিলম্ব বহুবিধ বাধা-বিঘ্ন উপস্থাপিত করিয়া মরণের পথ দূরতর করিয়া দেয়। কমলা শুনিয়াছিল, আত্মঘাতীর গতি স্বতন্ত্র-তাহার কোন কালেই মুক্তির আশা নাই,তাহাকে ab