পাতা:করুণা - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/১১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

> ob" করুণ সৈনিক স্তম্ভিত হইয়া রহিল, তাহ দেখিয়া গ্রহাচাৰ্য্য কহিল, “বন্ধু, এইজন্যই বলিয়াছিলাম যে তোমার অদৃষ্ট গণনা করিব না।” সৈনিক ঈষৎ হাস্ত করিয়া কহিল, “কিছু নহে বন্ধু, কবে মরিব বলিতে পার ?” “বিলম্ব আছে।” “কতদিন ?” “বিংশতি বর্ষ।” সৈনিক গ্রহাচাৰ্য্যকে একটি রজত-মুদ্রা দিতে গেল, কিন্তু সে তাহ গ্রহণ করিল না, কহিল, “বন্ধু, তোমাদিগের নিকট হইতে অর্থ লইতে গুরুর নিষেধ আছে।” সৈনিক জনতা ভেদ করিয়া পথে আসিয়া দাড়াইল। সুন্দর পাটলিপুত্র নগর, শস্য-শুামলা মাতৃভূমি সহসা তাতার নয়নপথ হইতে অন্তর্হিত হইল, চারিদিক রক্তবর্ণ হইয় উঠিল । সে আশ্রয়ের জন্য পথিপাশ্বস্থিত অট্টালিকার প্রাচীরে আশ্রয় গ্রহণ করিল। সেই সময়ে রাজপথের সেই স্থান দিয়া জনৈক শু্যামবর্ণ ক্ষুদ্রকায় প্রৌঢ় অশ্বারোহণে যাইতেছিল, সে সৈনিককে দেখিয়া অশ্বের গতি সংযত করিল। সৈনিক তাহার পরিচিত। অশ্বারোহী তাহার নাম ধরিয়া ডাকিল, কিন্তু আসন্ন মৃত্যুচিন্তাকাতর সৈনিক তাহা শুনিতে পাইল না । আগন্তুক তথন অশ্বপৃষ্ঠ হইতে অবতরণ করিয়া সৈনিকের স্কন্ধে হস্তার্পণ করিলেন। সৈনিক চমকিত হইয়া ফিরিয়া দাড়াইল এবং পরক্ষণেই তরবারি কোষমুক্ত করিয়া অভিবাদন করিল। আগন্তুক জিজ্ঞাসা করিলেন, “ইন্দ্রপালিত, তোমার কি হইয়াছে ?” সৈনিক কহিল, “দেব, কিছু নহে, অন্ত যুদ্ধযাত্রায় যাইব সেইজন্য দেবদর্শনে, যাইতেছি। “অদ্য যুদ্ধযাত্রা করিবে, একথা তুমি কেমন করিয়া জানিলে ?” “দৈবজ্ঞ বলিয়াছে।” “দৈবজ্ঞ কোথায় ?” “ঐ জনতার মধ্যে বসিয়া আছে।” “সে কি তোমাকে আর কিছু বলিয়াছে ?” “বলিয়াছে, আর কখনও পাটলিপুত্রে ফিরিব না । একবার জন্মের মত পাটলিপুত্র নগর দেখিয়া লইতেছি, আর ত দেখিতে পাইব না ?” “ইন্দ্রপালিত শান্ত হও, গণনা কি সৰ্ব্বদা সত্য হয় ?” “কি জানি ? দেব,