পাতা:করুণা - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/১৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

છે૭૨ করুণা ধীরে ধীরে স্বৰ্য্য-কিরণে চিমানীমণ্ডিত গিরিশ্রেণী রক্তাভ হইয়া উঠিল ; দূরে বাহুলীকার পরপারে গিরিপথগুলি অসিতবরণীর উরসে মুক্তাহারের স্তায় প্রতীয়মান হইতেছিল। শিশিরসিক্ত হামল ছৰ্ব্বাক্ষেত্রে পঞ্চশত অশ্বারোহী শ্রেণীবদ্ধ পাষাণপ্রতিমার স্তায় নিশ্চল হইয়া দাড়াইয়াছিল । দিবসের প্রথম প্রহর অতীতপ্রায়, পৰ্ব্বতের সামুদেশে, উপত্যকায়, গহনবনে অন্ধকার শেষ আশ্রয়স্থল হইতে পরাজিত হইয়া দূরীভূত হইতেছিল। পঞ্চশত অশ্বারোহীর পশ্চাৎভাগে বৃদ্ধ মহাবলাধিকৃত মহানায়ক অগ্নিগুপ্ত শুভ্র লৌহবৰ্ম্ম ধারণ করিয়া শ্বেতবর্ণ অশ্বপৃষ্ঠে আসীন ছিলেন। শুভ্ৰ তুষারস্পর্শে হিমতর তুহিনকণাবাহী মারুতহিল্লোলে বৃদ্ধের দীর্ঘ শুভ্ৰ-কেশগুচ্ছ শুভ্র শিরস্ত্রাণের পশ্চাতে উড়িয়া বেড়াইতেছিল। সহসা দূরে পর্বতশৃঙ্গে শঙ্খনিনাদ হইল, শৃঙ্গান্তরে তুর্য্যনিনাদ হইল, অশ্বারূঢ় বৃদ্ধ চমকিত হইলেন । পঞ্চশত অশ্বারোহী বিস্মিত হইয়া চাহিয়া দেখিল দূরে হিমানী-মণ্ডিত অভ্রচুম্বি পৰ্ব্বতশ্রেণী কৃষ্ণ-পিপীলিকার স্থায় সহস্ৰ সহস্ৰ অশ্বারোহীতে আবৃত হইয়া গিয়াছে। মহাবলাধিকৃত শঙ্খধ্বনি করিলেন, পঞ্চশত অশ্বারোহী ফিরিয়া দাড়াইল। অশ্ৰুরুদ্ধকণ্ঠে বৃদ্ধ কহিলেন, “বন্ধুগণ ! অদ্য আমাদিগের পরীক্ষা । চন্দ্রগুপ্তের পুত্র-পৌত্র নিহত হইয়াছে, নতুবা এই পিপীলিকাশ্রেণীর ন্যায় লক্ষ লক্ষ হ্ণ কখনই বক্ষুপার হইয়া বাহলীকাতীরে আসিতে পারিত না । চন্দ্রগুপ্তের ও কুমারগুপ্তের অন্নে এই দেহ পুষ্ট হইয়াছে। প্রথম চন্দ্রগুপ্তের শোণিত এখনও এই জীর্ণদেহে প্রবাহিত হইতেছে—অদ্য তাহার পরীক্ষা । বন্ধুগণ ! তোমরা মগধবাসী, অন্ত মগধশৌর্যের পরীক্ষার দিন। পঞ্চশত পঞ্চলক্ষের গতিরোধ করিতে পারুক না পারুক বাধা দিতে পারে। যুগ যুগান্তর হইতে বাহুলীক পবিত্র আর্য্যভূমি, বৰ্ব্বরের পাদস্পর্শ হইতে রক্ষা করিয়া আসিয়াছে,—শত শত বর্ষ ধরিয়া বাহুলীকার শুভ্র বারিরাশি আর্য্য-শোণিতে রঞ্জিত হইয়াছে,