পাতা:করুণা - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/১৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

> ○ど。 করুণা যুদ্ধ শেষ হইল, কিন্তু বিজেতা তৃণসেনা দ্রুতবেগে পলায়ন করিতে আরম্ভ করিল। দক্ষিণে উপত্যকার প্রান্তে অশ্বক্ষুরোথিত ধূলায় একখানি মেঘ দ্রুতবেগে বাহুলীকার দিকে অগ্রসর হইতেছিল। তুষারমণ্ডিত গিরি শৃঙ্গ হইতে আর একখানি মেঘ তাহার সহিত মিলিত হইতে আসিতেছিল। অৰ্দ্ধদও পরে মেঘদ্বয় মিলিত হইল, সহস্ৰ সহস্র হ্ণ নিহত হইল, সহস্ৰ সহস্ৰ বৰ্ব্বর অস্ত্রত্যাগ করিয়া আত্মরক্ষা করিল। তখন গুপ্ত-সাম্রাজ্যের সহস্ৰ সহস্ৰ অশ্বারোহী সেই মাগধ-অস্থি-মেধ-বসানিৰ্ম্মিত প্রাচীরের চারিদিকে আসিয়া দাড়াইল। প্রাচীরের উত্তরে দাড়াইয় জনৈক দীর্ঘাকার প্রৌঢ় যোদ্ধা অপর পারে অবস্থিত একজন তরুণ যোদ্ধাকে জিজ্ঞাসা করিল, “চক্ৰপালিত, অদ্য তোরণরক্ষায় কে ছিল ?” যুবা অবনত বদনে কহিল, “দেব, মহানায়ক স্বয়ং।” প্রৌঢ় শিহরিয়া উঠিলেন এবং কছিলেন, “সে কি ! সহস্ৰ অশ্বারোহী লইয়া দিগন্তবিস্তৃত সাম্রাজ্যের মহাবলাধিকৃত ক্ষুদ্র বাহুলীকের ক্ষুদ্র নদীতীর্থ রক্ষা করিতে আসিয়াছিলেন ? চক্রপালিত, বালীক নগরে কি গোল্মিক ছিল না ? সৰ্ব্বনাশ, যুবক ! তুমি কি জানিতে না যে, বৃদ্ধ অগ্নিগুপ্তের শীর্ণ বাহুবলের উপর কুমারগুপ্তের বিশাল সাম্রাজ্য রক্ষার ভার ন্যস্ত ছিল ? চক্রপালিত, হতাবশিষ্ট সেনা কোন দিকে গেল ?” “মহারাজপুত্র, একজনও অবশিষ্ট থাকিতে নদীতীর্থ অধিকৃত হয় নাই ।” সহসা এক গৌরবর্ণ খৰ্ব্বকায় যুবক প্রৌঢ়ের সম্মুখে দাড়াইয়া নিষ্কাসিত অসি হস্তে অভিবাদন করিয়া কহিল, “পিতৃব্য ! পাছক পরিত্যাগ করুন, আর্য্য সমুদ্রগুপ্তের রণনীতিতে প্রত্যাবৰ্ত্তন নাই। সহস্র যুদ্ধের শূর উত্তরাপথ ও দক্ষিণাপথের মহাবলাধিকৃত আপনার পিতৃব্য এবং আমার খুল্লপিতামহ মহানায়ক অগ্নিগুপ্ত বিষ্ণুলোকে গমন করিয়াছেন । পিতৃব্য, আত্মবিস্তৃত হইবেন না, গুপ্তবংশে কে কবে প্রত্যাবৰ্ত্তন করিয়াছে ? কে কবে পশ্চাৎপদ হইয়াছে ? আৰ্য্য অগ্নিগুপ্ত এইখানেই আছেন।” প্রৌঢ় দীর্ঘনিশ্বাস ত্যাগ করিয়া যুবককে আলিঙ্গন করিয়া কহিলেন,