পাতা:করুণা - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/১৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নবম পরিচ্ছেদ >Q ) আহারের সময়ে কিঞ্চিৎ শর্কর অথবা গুড় সংযোগ করিতে হয়, কিন্তু ঠাকুরাণীর ব্যঞ্জন যেন ইক্ষুগুড় ।” o তরুণী এইবার মস্তক তুলিয়া কহিল, “ঠাকুর, আমি বুঝি ব্যঞ্জনে গুড় মিশ্রিত করি ? আর কখনও তোমাকে রন্ধন করিয়া খাওয়াইব না।” “ই। হা, ঠাকুরাণী কর কি ! এমন কাৰ্য্য কি তোমাকে দিয়া সম্ভব হইতে পারে ? শ্ৰীমুখপঙ্কজের স্যার ঐকরপল্লবে ও মধু আছে, তাই না তইলে ভাতুমিত্র কল্য গান্ধারা নষ্টকার সন্ধানে যাই ত ।” ↔ তরুণী রোষকয়ায়িত নেত্রে তরুণের দিকে চাহিল, তক্ষণ লজ্জিত হইয়া কহিল, “কলা চক্রপাণিতের গুতে এক গান্ধারী নৰ্ত্তক আসিয়াছিল, ঋৰভু বোধ হয় তাহাকে দেখিয়া মোঙ্গিত হঠয়াছে।” তরুণী সে কথাঃ কৰ্ণপাত না করিয়া জিজ্ঞাসা করিল, “সে ই বুঝি ভীমপলশ্র বাজাইয়ু! ছিল ?” আশু গৃহবিবাদ সম্ভবপর দেখিয়া ঋষভদেব কহিলেন, “ঠাকুরাণি, সে কেবল ক্ষীরের লড়ক বাজাহতেছিল, এখন তুমি একখানি ভীমপলশ্ৰী বাজাও—আমি একবার গৌড়ের মোদকটা মনে করিয়ু লই ।” “ঠাকুর, আমি ত রোহিণী নহি ?” “আর গঞ্জনা দি ও না ঠাকুরাণি " ঋষভ এই বলিয়া দীঘনিশ্বাস ত্যাগ করিলেন, তাহ দেখিয়া ভানুমিত্র ও করুণা হাসিয়া উঠিলেন। ব্রাহ্মণ কছিলেন, “হাসি ও না ঠাকুরাণি ! রোহিণীকে আমি বড়ই মেছ করিতাম,—এখন তুমি ভীমপলশ্র বাজাও ” করুণা বীণা তুলিয়া লইলেন, চম্পকসদৃশ ক্ষুদ্র কোমল অঙ্গুলিগুলি ক্ষিপ্রগতিতে বীণার তারে আঘাত করিয়া স্বরলক্টরী উৎপাদন করিল, জ্যোৎস্না যেন উজ্জ্বলতর হইয়া উঠিল, নীরব নিস্তব্ধ নিশায় সুপ্তিময় জগৎ যেন সহসা জাগিয়া উঠিল । অৰ্দ্ধদণ্ড বাজিয়া বীণা নীরব হইল, তখন ঋষভদেব পুনৰ্ব্বার দীর্ঘনিশ্বাস তলগ করিলেন। তাহা দেখিয়া ভানুমিত্র বলিলেন, “খৰ্ষভ, গোপবধু রোহিণীর জন্য যে আকুল হইলে ?” ব্রাহ্মণ দ্বিতীয়বার দীর্ঘনিশ্বাস ತಗಳ್ಳ করিয়া কহিল, “বন্ধু, রোহিণীর জন্য নহে ।