পাতা:করুণা - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/২০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

3 е е করুণা পুত্ৰগণ শুন, আমিও গুপ্তবংশ জাত, আমিও রোষে, ক্ষোভে অভিমানে পাটলিপুত্র ত্যাগ করিয়াছি। কুমারগুপ্ত ও উন্মত্ত হইয়াছে কিন্তু গোবিন্দ ও স্কন্দ জীবিত আছে। আর্যাবৰ্ত্ত রক্ষিত হইবে, হণের পাদস্পর্শে উত্তরাপথ কলঙ্কিত হইবে না। মগধ বিস্তৃত হও, ক্ষুদ্র মগধ বারবনিতা ও নটনটর রঙ্গমঞ্চ হউক ;–কুমারগুপ্ত রসাতলে যাউক, তথাপি তোরণ রক্ষা করিতে হইবে । বংশগৌরব, আত্মাভিমান বিস্তৃত হও, রমণী ও শিশু রক্ষা করিতে হইবে, দেবতা ও ব্রাহ্মণ রক্ষা করিতে হইবে ! পুত্ৰগণ, যুদ্ধব্যবসায়ে কেশ শুক্ল করিয়াছি, তথাপি অপমান ও অভিমান আমাকে মুগ্ধ করিয়াছিল। শিশু স্বন্দু তাহা দূর করিয়াছে। স্কন্দগুপ্ত বিষ্মিত হইয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “তুমি-আপনি কে ?" বৃদ্ধ ভিক্ষুক ঈষৎ হাস্ত করিয়া জিজ্ঞাসা করিল,“চিনিতে পারিলে না স্কন্দ ?” তখন সেই দণ্ডধর যুক্তকর হইয়া কহিল, “প্রভু, আমি চিনিয়াছি, কুমারপাদীয় মহানায়ক কৃষ্ণগুপ্তদেব আপনার সম্মুখে দণ্ডায়মান ।” সকলেই বৃদ্ধ.মহাপ্রতীকারের পদধূলি গ্রহণ করিলেন। কৃষ্ণ গুপ্ত কহিলেন, “স্কন্দ, শোকের সময় নহে, মহাদেবী তনুত্যাগ করিয়াছেন। বহুপূৰ্ব্বে জাহ্নবীতীরে আমি তাহার প্রেতপিণ্ড দিয়া আসিয়াছি। স্নান করিয়া গুচি হও, শোক পরিত্যাগ কর, আমি কুণরক্তে পট্টমহাদেবীর তর্পণ করিতে বাহুলীকে আসিয়াছি। ভীষণ অত্যাচারে গুপ্তকুললক্ষ্মী বিচলিত । গুপ্তকুলরৰি ! তাহাকে সিংহাসনে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করিতে আর্য্যাবৰ্ত্তে তুমি ভিন্ন আর কেহই নাই।” আশ্রমোচন করিয়া নীরবে স্কন্দগুপ্ত ও মাগধসেনানিগণ বাহুলীকাসলিলে অবতরণ করিলেন ।