পাতা:করুণা - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/২৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ ミ○> নগরের পরিণাম দেখিয়া তাঙ্গর ভালুমিত্রের অবস্থা বুঝিতে পারিয়াছিল। যে সকল সেনা গৃহে পুত্ৰকস্তা রাখিয়া অসিয়াছিল, তাহারা নীরবে দুই বিন্দু অশ্রুপাত করিল, যাঙ্গর যুবক, তাহারা হুঙ্কার করিয়া উঠিল । সহসা একজন যুবা অসি কোষমুক্ত করিয়া শিরস্ত্রাণে স্পর্শ করাইল, সঙ্গে সঙ্গে শত শত অসি কোষমুক্ত হইল। অসিশীর্ষ লৌহনিৰ্ম্মিত শিরস্ত্রাণ স্পশ করিয়া অশ্রু অন্ধ-নয়নে ক্লান্ত, পথশ্রান্ত, মাগধ-সেনা বীরপত্নীর পবিত্র স্মৃতির উদ্দেশে অভিবাদন করিল। তাঙ্গ দেখিয়া বন্ধুবন্ম, হর্ষগুপ্ত ও চকুপালিত সামরিক প্রথায় অভিবাদন করিলেন। স্কন্দগুপ্ত ভালুমিত্রের পশ্চাতে আসিয়া দাড়াইয়াছিলেন, শোক বিচলিত মাগধ-সেনার উত্তেজনা দেখিয়া তিনিও উত্তেজিত ইয়া উঠিলেন। স্কন্দগুপ্ত অসি কোষমুক্ত করিতেছেন দেখিয়া ভানুমিত্রের চমক ভাঙ্গিল, তিনি যুবরাজের হস্তধারণ করিয়া রুদ্ধকণ্ঠে বলিয়া উঠিলেন, “না না--তুমি না-স্কন্দ, কাহাকে অভিবাদন করিতেছ,—করুণ—কখনই মরে নাই,--মিথ্যা নহে,—ভাই—স্কন্দ– যুবরাজ-বালাসখা—সে আমার—সে মরিতে পারিবে, না- সে আমার অঙ্গ স্পর্শ করিয়া শপথ করিয়াছিল—সে মিথ্যা কহিবে না— যুবরাজ, ভাই, তুমি না – তুমি জ্যেষ্ঠ, করণের অকল্যাণ করিও না—মরে নাই—শোক নাই – দুঃখ নাই—আবার আসিবে—আমাকে না দেখিয়া মরিবে নাবলিয়াছে মরিতে পারিবে না—ন—তুমি না— আর যে হয় বাধা নাই— কিন্তু – করুণ—করুণ-কেন লুকাইয়া আছ ?” দৃঢ় হস্তে ক্ষিপ্ত ভানুমিত্রের হস্তধারণ করিয়া যুবরাজ অসি কোষমুক্ত করিয়া শিরস্ত্রাণে স্পর্শ করাইলেন। ভানুমিত্রের নয়নদ্বয় বিস্ফারিত হইয়া উঠিল, তিনি তারস্বরে বলিয়া উঠিলেন, “স্কন্দ-তুমিও তবে—সত্য— তবে নাই-করুণ-করুণ— , ভালুমিত্রের সংজ্ঞাহীন দেহ দ্বিতীয়বার সশব্দে গৃহতল চুম্বন করিল।