পাতা:করুণা - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/৩২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩২২ করুণা ক্ষয় হইয়া গিয়াছে। যদি বর্ষাকালে গৌড়ে যাও, মা, তাহা হইলে দেখিতে পাইবে জাহ্নবীর পঙ্কিল জলরাশি সেই সোপানাবলি ধৌত করিতেছে। আমার ভস্ম বা অস্থি গুলি সেই সোপানে ঢালিয়া দি ও ; কিন্তু যদি গ্রীষ্মে অথবা শীতকালে যা ও তাহ, ইহলে দেখিবে জাহ্নবা ক্ষীণকায়া, কেশবেব ঘট্টার নিম্নে সুদূর নিৰ্ম্মিত শুভ্র বালুকারাশি, মা, শুষ্কসৈকতে আমার ভস্ম ছড়াইয়া দিও না, তাহা হইলে তৃষ্ণাতুর প্রেত কেশবের ঘট্টার চারিপাশ্বে ঘুরিয়া বেড়াইবে । তথন কেশবের খট্ট হইতে দূরে ক্ষীণকায়া জাহ্নবীর ক্ষীণ জল-স্রোত যেখানে উত্তরচ্ছদের স্তায় শুভ্র সৈকতভূমির এক পাশ্ব আৰ্দ্ৰ করিয়াছে দেখিতে পাইবে সেই খানে উদরপরায়ণ ঋষভের ভস্মরাশি ছড়াইয়া দি ও " বৃদ্ধ ক্লাস্ত হইয়া চক্ষুদ্বয় মুদ্রিত করিল, কোটর হইতে দুই বিন্দু অশ্রু গড়াইয়া পড়িল । কিযুৎক্ষণ নীরব থাকিয়া বৃদ্ধ ধীরে ধীরে পুনরায় বলিতে আরম্ভ করিল, “মা, কাপালিক যাহা বলিয়াছিল তাহা সত্য হইয়াছে, সমস্তই সত্য হইবে, একদিন তুমি গৌড়ে ফিরিবে, গঙ্গা-কালিন্দী মহানন্দ বেষ্টিত গৌড়নগর দেখিবে । মা, সেই দিন আমার কথা মনে করিস । আমি গৌড়বাসা, গৌড়নগরে আমার জন্ম হইয়াছিল। যে দিন গৌড়ে ফিরিয়া যাইবি সেই দিন আমার হইয়া আম্রপনসবনে গুণমল গৌড়ভূমি নয়ন ভরিয়া দেখিস । গোঁড়বাসা আমাকে বড় ভালবাসিত, তাহারা জানিত ঘে স্থূলকায় কৃষ্ণবর্ণ ঋষভ আহার বড় ভালবাসে, সেই জন্য তাহারা কখনও আমাকে অন্নের অভাব অনুভব করিতে দেয় নাই। গৌড়ে ফিরিয়া কেশবের ঘটায় দাড়াইয়া তাহাদিগকে, বলিস্ যে, ঋষভ মৃত্যুকালেও তাঙ্গদিগের স্নেহ ও প্রতি বিস্তুত হয় নাই। বলিস্ ঋষভ কখনও লোভে সম্বরণ করিতে শিখে নাই, সেই পাপে মৃত্যুকালে তামল গৌড়দেশ তাহার নয়নপথ হইতে দূরে সরিয়া গিয়াছিল।” , ধীরে ধীরে বুদ্ধের বাকশক্তি রুদ্ধ হইল, ধীরে ধীরে চেতুন বিলুপ্ত