পাতা:করুণা - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুর্দশ পরিচ্ছেদ お)○ “একদিন ঐ কথা শুনিয়া, ঐ মুখ দেখিয়া সমস্ত বিস্তুত হইয়াছিলাম । ইন্দ্ৰলেখা, বিংশতিবর্ষ পূৰ্ব্বে তাহার যথোচিত প্রতিদান দিয়াছ। পঞ্চবিংশতিবর্ষ পূৰ্ব্বে তোমাকে পিতার নামাঙ্কিত যে অঙ্গুরীয়ক দিয়াছিলাম অন্ত তাহাই আমার মূল্য। তাহ ফিরাইয়া দিলে তোমার প্রার্থনা পূর্ণ হইবে ।” ব্যস্তভাবে অনামিকা হইতে অঙ্গুরীয়ক মোচন করিতে করিতে ইন্দ্রলেখা কহিল, "লও, এখনই লও,—মহারাজ-পুত্র, আমাকেও লও, তোমার পদপ্রান্তে আমার কলুষিত দেহকে আশ্রয় দাও।” অঙ্গুরীয়ক গোবিন্দগুপ্তের হস্তগত হইল, ইন্দ্ৰলেখা পুনৰ্ব্বার তাঙ্গকে আলিঙ্গন করিল এবং সেই সময়ে রমণী বস্ত্রমধ্য হইতে ছুরিকা গ্রহণ করিয়া গোবিন্দ গুপ্তের কণ্ঠে আঘাত করিল। কঠিন জালবৰ্ম্ম স্পর্শ করিয়া ছুরিকা খণ্ড খণ্ড হইয়া গেল, গোবিন্দ গুপ্ত উচ্চ হাস্ত করিয়া দূরে সরিয়া দাড়াইলেন। সহসা বৃক্ষান্তরাল হইতে বহু অস্ত্রধারী পুরুষ নির্গত হইয়া মহারাজপুত্রকে আক্রমণ করিল, সেই সময় উদ্যানমধ্যে পুনরায় পেচক ডাকিয়া উঠিল । নিঃশব্দ পদসঞ্চারে মুরারি ও তাচার শতজন অনুচর আততায়ীগণকে বেষ্টন করিয়া বন্দী করিল । সেই অবসরে ইন্দ্রলেখা পলাইল । যে কৃষ্ণবস্ত্রাবৃত পুরুষ, গোবিন্দগুপ্ত, মুরারি ও ঋষভদেবের পশ্চাতে চৈত্যগর্ভ হইতে নির্গত হইয়াছিল, সে ইন্দ্রলেখাকে পলায়ন করিতে দেখিয়া দূরে থাকিয়া তাঙ্গর অনুসরণ করিল। ইন্দ্ৰলেখা উষ্ঠান পরিত্যাগ করিয়া কুকুটমঙ্গবিহারে প্রবেশ করিল। তোরণদ্বারে অন্ধকরে দীর্ঘাকার ভিক্ষু তাহার জন্য অপেক্ষা করিতেছিলেন, র্তাহাকে দেখিয়া ইন্দ্রলেখ কহিল “পলাও শীঘ্ৰ পলাও, সমস্ত ব্যর্থ হইয়াছে।” “কি হইয়াছে ?” “বোধ হয় মহাপ্ৰতীহারের সেন উদ্যানমধ্যে লুক্কায়িত ছিল, তাহারা আমার অনুচরদিগকে বন্দী করিয়াছে।” “গোবিন্দগুপ্ত হত হইয়াছে ত ?” “না, জালবৰ্ম্ম পরিয়া আসিয়াছিল।” “কত সেনা দেখিলে ?” “শতাধিক ।”