পাতা:কলিকাতার ইতিহাস.djvu/১১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১৪
কলিকাতার ইতিহাস।

লক্ষ টাকা পাইতেন; সেই টাকা কৃষ্ণচন্দ্র শোধ করিতে না পারায় নবকৃষ্ণ এক সময়ে এই বিগ্রহ ক্রোক করেন।”

 মহারাজ নবকৃষ্ণ দুই প্রকাণ্ড ঠাকুরবাড়ী নির্মাণ করান এবং দেববিগ্রহগুলিকে নানাপ্রকার রত্নালঙ্কার ও সোণার বাসনকোসন প্রভৃতি দান করেন। সেই সমস্ত সম্পত্তির বর্তমান মূল্য চারি লক্ষ টাকার নূন হইবে না। বর্তমান সময়েও এ দুইটি ঠাকুরবাড়ীর ন্যায় সুন্দর দেবালয় কলিকাতায় আর নাই।

 জৈন সম্প্রদায়েরও স্বতন্ত্র দেবালয় আছে। মানিকতলা ও হালসিবাগান বোভের বহির্ভাগে প্রসিদ্ধ জৈনমন্দির অবস্থিত। এই মন্দিরসংলগ্ন ভূমি, সুন্দর সুন্দর পাদপচরণপণ, পুষ্পবৃক্ষ, নানাপ্রকার খোদিত মুর্তি, কৃত্রিম প্রস্রবণ, এবং ভোজন ও আমোদ প্রমোদের নিমিত্ত নির্দিষ্ট রম্য ভবনসমুহে সুশশাভিত। মন্দিরটি দেখিতে অতি সুন্দর; উহার নির্মাণপ্রণালী অতি বিচিত্র অধিকাংশ মাড়ওয়ারি জৈনসম্প্রদায়ভুক্ত তাহাও প্রতি বৎসর যেরূপ মিছিল সাজাইয়া বড়বাজার হইতে মন্দিরে এবং পুনরায় মন্দির হইতে বড়বালারে যাইয়া থাকে, সেরূপ নয়নমনোহর আড়ম্বরবিশিষ্ট মিছিল কলিকাতার রাস্তায় আর একটিও দেখিতে পাওয়া যায় না। পরেশনাথ, মহাবীর ও আদিনাথ—ইহারাই জৈনধর্ম্মের প্রবর্তক ও সংস্কারক। জৈনগণ ইহাদের পূজা করিয়া থাকেন; তদ্ভিন্ন তাহারা তীর্থঙ্কর বা জৈনগণেরও উপাসনা করেন। বৌদিগের তা জৈনগণও প্রাণিহিংসা মহাপাপ বলিয়া জ্ঞান করেন; তাহারা কলিকাতায় ও তাহার চতুষ্পার্শে: কয়েকটি পিজরাপোল অর্থাৎ রুগ্ন পশুর আশ্রম প্রতিষ্ঠিত করিয়াছেন। বাণিজ্যই এই সদাশয় সম্প্রদায়ের প্রধান অবলম্বন; বড়বাজারের মধ্যে ইহারাই