পাতা:কলিকাতার ইতিহাস.djvu/১৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ষষ্ঠ অধ্যায়।
১৩১

মৃত্যুকাল পর্যন্ত তিনি অতি দক্ষতার সহিত নিজ তত্ত্বাবধানে স্কুলের কার্য্য পরিচালনা করিয়াছিলেন। সৌভাগ্যক্রমে তিনি হামান জিওফ্রি নামক একজন দুঃস্থ ব্যারিষ্টার প্রাপ্ত হন; সেই ব্যারিষ্টা- রের উৎকৃষ্ট শিক্ষায় গৌরমোহনের স্কুল বিলক্ষণ প্রাধান্য লাভ করিল। গৌরমোহনকে দেখিলেই ধর্ম্মভীরু বলিয়া বোধ হইত; তিনি এরূপ সরল প্রকৃতির লোক ছিলেন যে, তিনি প্রথম শ্রেণীর বালকদিগকে অকপটে বলিয়া ফেলিতেন যে, আমি তোমাদিগকে পড়াইতে পারি না। বৃথা অভিমানের লেশ মাত্র হাতে ছিল না। যাহা তিনি জানতেন, তাহা অন্য সমস্ত দেশীয় শিক্ষক অপেক্ষা উত্তমরূপে বুঝাইয়া দিতে পারিতেন। তিনি অতি মৃদু- স্বভাব ছিলেন; আশ্চর্যের বিষয় এই যে, নানাপ্রকার স্বভাব ও মেজাজের লোকের সহিত তাহাকে কারকারবার করিতে হইলেও তিনি অতি সুকৌশলে আপনার কার্য্য সম্পন্ন করিতেন, তিনি কখ- নও কাহারও বিরাগভাজন হন নাই। তিনি ছাত্রমণ্ডলীর অতিশয় প্রিয়পাত্র ছিলেন; আর যদিও তিনি নিয়মানুগামিতা ও বশবর্ত্তিতা সম্বন্ধে কঠোর শাসনপ্রণালী অবলম্বন করিতে কুণ্ঠিত হইতেন না এবং যদিও তাহাকে এমন অনেক স্বেচ্ছাচারী বালককে লইয়া চলিতে হইত, যাহাদের বিদ্যালয়ে উপস্থিতি তাহাদের ইচ্ছার উপর নির্ভর করে, কিন্তু তথাপি তিনি সকলেরই সমানভাজন ও অনেকের প্রণয়াস্পদ হইয়াছিলেন।”

  এস্থলে শীলস্ ফ্রী কলেজ সম্বন্ধেও দুই চারি কথা না বলিয়া থাকা যায় না। সদাশয় মতিলাল শীলের বদান্যতা হইতে এই বিদ্যালয়ের উদ্ভব। কলিকাতার মধ্যে একটিমাত্র বিদ্যালয়ে দেশীয় দরিদ্র ছাত্রগণকে বিনা বেতনে শিক্ষা দেওয়া হইয়া থাকে। কোন