পাতা:কলিকাতার ইতিহাস.djvu/২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৬
কলিকাতার ইতিহাস।

 ইংরেজদিগের হুগলীতে অবস্থান কালে দুর্ভাগ্যক্রমে সামান্য একটা বাজারে ঝগড়া লইয়া নবাবের ফৌজের সহিত ইংরেজদিগের বিবাদ উপস্থিত হয় এবং সেই সূত্রে কোম্পানীকে হুগলী পরিত্যাগ করিয়া আসিতে হয়। ঘটনাটা এই হুগলী তৎকালে ফৌজদারি উপাধিধারী জনৈক মুসলমান রাজকর্মচারীর শাসনাধীন ছিল। ঐ ব্যক্তি স্বেচ্ছানুসারে কার্য্য করিবার ক্ষমতা পাইয়াছিল, তাহার উপর তাহার লোকবলও যথেষ্ট ছিল, এজন্য সে বিদেশীদিগকে অত্যন্ত অবজ্ঞা করিত এবং তাহাদের নিকট হইতে যাহা লইতে পারিত, তাহাই লইয়া আপনার অর্থলালসা চরিতার্থ করিত। ইংরেজদিগের সংখ্যা অতি অল্প ছিল; সুতরাং ফৌজদার তাহাদের সেই অসহায় অবস্থার সুযোগ গ্রহণ করিয়া আপনার স্বার্থসাধন করিতে লাগিল। তাহার এই সকল অন্যায় অত্যাচার ও জুলুম জবরদস্তিতে ডিরেক্টরসভা অত্যন্ত বিরক্ত হইয়া উঠিলেন। তাঁহারা তাহাদের হুগলীস্থ এজেণ্টকে এইরূপ আদেশ করিয়া পাঠাইলেন যে, তাহাদের মালগুদাম নির্মাণ করিবার জন্য ও গড় দুর্গাদি দৃঢ় করিবার নিমিত্ত নবাবের নিকট যেন কিছু ভূমি প্রার্থনা করা হয়, এবং সমস্ত বিষয় যেন মোগল সম্রাটের নিকট নিবেদন করা হয়। ক্রমশঃ ফৌজদার ইংরেজদিগের প্রতি জুলুম করি আরও অধিক অর্থের দাবী করায় অবস্থা চরম উঠিল এবং পূর্বোক্ত বিবাদ উপস্থিত হইল। অনন্তর নবাবের নিকট এবং তৎপরে মোগল সম্রাটের নিকট আপীল করা হইল, কিন্তু তাহাতে কোনও ফলোদয় হইল না। ইতিমধ্যে ইংরেজদিগের বাণিজ্য রহিত হইয়া গেল, এবং তাহাদিগের জাহাজগুলি অর্থপূর্ণ অবস্থাতেই তথা হইতে পঠাইয়া দেওয়া হইল।