পাতা:কলিকাতার ইতিহাস.djvu/২৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৬৮
কলিকাতার ইতিহাস।

ডেভিড, হেয়ার প্রভৃতি বেসরকারী ইংরেজ মহাপুরুষগণ সদাশয় প্রণোদিত হইয়া দেশীয় ভাষার পরিপুষ্টি ও উৎকর্ষসাধনকল্পে বিস্তর সহায়তা করিয়াছেন। বাঙ্গালা ভাষার ভবিষ্যৎ যে বিলক্ষণ আশাপূর্ণ তাহাতে সন্দেহ নাই। প্রায় ৫ বৎসর গত হইল, জনৈক লেখক কোন সাময়িক পত্রে বাঙ্গালা ভাষা সম্বন্ধে লিখিয়াছেন - “ড্যাণ্টির পূর্বে ইটালীয় ভাষা যেরূপ অপরিপক্ক ছিল, পঞ্চাশৎ বর্ষ পূর্বে বাঙ্গালা ভাষাও তদ্রুপ অপক্ক ছিল। ড্যাণ্টি আবির্ভূত হই- লেন এবং সেই একজন লোক একখানি মাত্র গ্রন্থ ‘ডিভাইন কমেডি রচনা দ্বারা প্রতিপন্ন করিলেন যে, তাঁহার দেশীয় ভাষা অতি উচ্চ ও জটিল ভাব প্রকাশে সমর্থ। বঙ্গদেশেও কি আমরা সেইরূপ আশা করিতে পারি না? বাঙ্গালা ভাষার দ্রুত ও অশ্রুতপূর্ব উন্ন- তির কথা বিবেচনা করিয়া দেখিলে স্পষ্টই প্রতীত হয় যে, পূর্বোক্ত লেখকের ভবিষ্যদ্বাণী অনেকটা সফল হইয়াছে।

রাজা রামমোহন রায় কলিকাতার ব্রাহ্মসমাজের স্থাপয়িতা। এই ব্রাহ্মসমাজের আম্মেলনে কেবল যে বাঙ্গালা সংবাদপত্রেরই পুষ্টি ও উন্নতি হইয়াছে, তাহা নহে, প্রত্যুত তাহা হইতে বাঙ্গালা ভাষা এবং সাহিত্যও বিলক্ষণ সমুতা লাভ করিয়াছে। প্রসিদ্ধ ব্রাহ্ম সাহিত্য সেবীদিগের মধ্যে কেশবচন্দ্র সেন, অক্ষয়কুমার দত্ত, পণ্ডিত শিবনাথ শাস্ত্রী, চিরঞ্জীব শৰ্মা, গৌরগোবিন্দ রায়, রবীন্দ্র নাথ ঠাকুর, দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রভৃতির নাম সবিশেষ উল্লেখ যোগ্য। তদানীন্তনকালের ব্রাহ্মদিগের লেখনী দেশের প্রচলিত ধর্মের বিরুদ্ধে পরিচালিত হইত, কারণ তাহারা মনে করি- তেন, এই ধর্ম্ম কুসংস্কারময় এবং ইহা কোনরুপ ধ্রুব সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত নহে। আদিম বৈদান্তিক নীতির পূনঃ স্থাপ-