পাতা:কলিকাতার ইতিহাস.djvu/২৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নবম অধ্যায়।
২৬৯

নের হলে একটি নূতন ধর্মমত সৃষ্ট হইল। বলা বাহুল্য, এই নব ধর্মমতের অনেক ভাই ইউরোপীয় ধর্ম্মশাস্ত্র হইতে ও নানা- প্রকার ইউরোপীয় রাজনীতিক্ষেত্র হইতে গৃহীত হইয়াছিল। বিবেকই মনুষ্যের কার্যের নিয়্নতা, স্বাধীনতা, সাম্য, ও ভ্রাতৃত্ব প্রভৃতি কল্পিত নীতি, দেশের সর্বনাশাধক প্রকৃত ও অত্যা- চারের বিরুদ্ধে অভিযান, পুরোহিত শ্রেণীর (ব্রাহ্মণজাতির) ধ্বংসসাধন, জাতিভেদ-প্রণালীর সম্পূর্ণ বিলোপ, হিন্দু রমণী- গণকে তাঁহাদের তথাকথিত দুর্দশা ও হীনাবস্থা হইতে উদ্ধার করিয়া পুরুষদিগের ন্যায় একই প্রকার অধিকার প্রদানপূর্বক পুরুষদিগের সহিত একাশনে সংস্থাপন প্রভৃতি বিষয় প্রকাশ্যে প্রচারিত হইতে লাগিল। এই সকল ভদ্রলোক দেবপ্রতিমার বিনাত বিষয়ে যেরূপ আগ্রহ প্রদর্শন করিয়াছেন, তাহাও নিতান্ত বিস্ময়া- বহ। ইহা সমাজ, পৈতৃক ধর্ম্ম ও আত্মীয় স্বজন পরিত্যাগ করিয়া দূরে অপসৃত হইয়াছেন, এবং ইহাদের মতে যাহা যাহা গুরুতর অনিষ্টের কারণ, সমাজের ক্ষতিকর ও উন্নতির প্রতিরোধক, সেগুলির মূলোচ্ছেদ করিবার অভিপ্রায়ে আপনাদের সাংসারিক উন্নতির সর্বপ্রকার চেষ্টায় জলাঞ্জলি দিয়াছেন। কোন কোন ইংরেজ ও ফরাসী লেখকের সর্বনাশকর রীতি-প্রণালী এ দেশের সর্বপ্রকার অনিষ্টের একমাত্র প্রতীকার বলিয়া ইহারা যেরূপ সমা- দর ও সাহসের সহিত গ্রহণ করিয়াছেন, বাঙ্গালী জাতির ইতিহাসে আর কখনও তাহা খটে নাই। এক শ্রেণীর ইউরোপীয় দার্শনিক লেখকগণের মনোমুগ্ধকরী ও ওজস্বিনী ভাষা ইহাদিগকে এতদূর অভিভূত ও জ্ঞানশুন্য করিয়া ফেলিয়াছে যে, ইহারা হিন্দুজাতির বিশেষ ভাব ও প্রকৃতি এবং পূর্ব গৌরবাদির কথা সম্পূর্ণ বিস্মৃত