পাতা:কলিকাতার ইতিহাস.djvu/২৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নবম অধ্যায়।
২৭৯

মহনীয় এবং এ বিষয়ে ইহারা কিরূপ মহত্ত্ব প্রদর্শন করিয়া থাকেন, তাহা পশ্চাল্লিখিত আখ্যায়িকা হইতে স্পষ্ট উপলব্ধি হইবে;—

 এক সময়ে মহাৰাজ নবকৃষ্ণ দেব বাহাদুর পণ্ডিত জগন্নাথ তর্ক- পঞ্চাননকে বার্ষিক এক লক্ষ টাকা আয়ের একটা জমিদারী দান করিতে চাহেন। তৎকালে উক্ত পণ্ডিত মহাশয় এই বলিয়া তাহা গ্রহণ করিতে অস্বীকৃত হন যে, অর্থলাভ অনর্থের মূল ও তাহাতে ধর্ম্মপ্রবৃত্তি বিনাশ পায়, এবং তাহার বংশধরেরা ধনবান্ হইলে বিদ্যালোচনা পরিত্যাগ করিয়া বিলাসব্যসনে মত্ত হইবে। কি আর্য বিদ্যানুরাগ! কি মহনীয় নির্লোভত্ব! আর একটি দৃষ্টান্ত দেখুন। নবদ্বীপাধিপতি রাজা ঈশ্বরচন্দ্র যৎকালে পণ্ডিত রামনাথ তর্কসিদ্ধান্তের সহিত সাক্ষাৎ করিতে যাইয়া তাহার সাংসারিক অবস্থা ও অভাব আকাক্ষার কথা জিজ্ঞাসা করেন, তৎকালে তর্ক- সিদ্ধান্ত মহাশয় রাজাকে যে উত্তর প্রদান করিয়াছিলেন, তাহাতে অতি উচ্চ মহানুভবত্ব ও আত্মগৌরবের ভাব সুপরিব্যক্ত। সুপ্র- সিদ্ধ দার্শনিক পণ্ডিত ডাইওজেনিজ মহাবীর আলেকজাণ্ডার দি গ্রেটের প্রশ্নের যে উত্তর দিয়াছিলেন, তাহাতেও ঐরূপ ভাব ব্যক্ত হইয়াছিল।

 এ বিষয়ে রেভারেণ্ড ওয়ার্ড বলেন;—“প্রাচীন কালের হিন্দুগণ যে অগাধ জ্ঞান গৌরবে ভূষিত ছিলেন, এ কথা কোন বুদ্ধিমান ব্যক্তিই অস্বীকার করিতে পারিবেন না। তাহারা যে প্রকার বহু বিষয়ে গ্রন্থ রচনা করিয়া গিয়াছেন, তাহাতে প্রতিপন্ন হয় যে, প্রায় সকল বিজ্ঞানই তাহাদের মধ্যে আলোচিত হইয়াছিল এবং যে ভাবে তাহারা এই সমস্ত বিষয়ের আলোচনা করিয়াছিলেন, তাহাতে প্রতি- পন্ন হয় যে, হিন্দু পণ্ডিতগণ বিদ্যাবিষয়ে প্রাচীন অন্য কোন জাতি