পাতা:কলিকাতার ইতিহাস.djvu/২৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৮০
কলিকাতার ইতিহাস।

অপেক্ষা নিকৃষ্ট ছিলেন না। তাঁহাদের দর্শন ও স্মৃতিগ্রন্থসমুহ যতই অধ্যায়ন করা যায়, ততই পাঠক ঐ সকল স্থ র জ্ঞ র গভীরতা উপলব্ধি করিয়া বিস্ময়াবিষ্ট হন।

 কলিকাতার মহারাজ নবকৃষ্ণ দেব বাহাদুর পণ্ডিতকে অকা- তরে অর্থদান এবং তাহাজের চতুষ্পাঠী সংস্থাপনে আনুকূল্য করি তেন, তাহারই একান্ত যত্নে হাতীবাগান[১] বাঙ্গালার মধ্যে সংস্কৃত বিদ্যার অন্যতম কেন্দ্রস্থান বলিয়া প্রসিদ্ধ হইয়া উঠে। তিনিই পণ্ডিতদিগের দাবির কথা রাজপুরুষদিগের গোচরে আনয়ন করেন এবং তাঁহাদিগকে উপাধি বৃত্তি ও অন্যান্য পুরস্কার প্রদানের ব্যবস্থা করাইয়া দেন। পণ্ডিতদিগের অবস্থার উন্নতিসাধনার্থ তাহার যত্ন চেষ্টার ভূয়সী প্রশংসা করিয়া শম্ভুচন্দ্র মুখোপাধ্যায় ধাহা লিখিয়াছেন, তাহার মর্মার্থ নিম্নে উদ্ভুত হইল;—

 “বিদ্যার প্রগাঢ় উৎসাহদাতা বলিয়া চতুষ্পর্শ্ববর্তী স্থানের সমস্ত পণ্ডিত তাহার প্রাসাদে সমবেত হইতেন; তদ্ভিন্ন ভারতের দূর্ববর্তী স্থান হইতে যে সকল পণ্ডিত কার্যবশত কলিকাতায় আসিতেন, ভঁহারাও তথায় আসিয়া আশ্রয় লইতেন। এতদ্দেশপ্রচলিত একটি বহু প্রাচীন ও অতি মহনীয় রীতি অনুসারে ধনবান্ লোকের পণ্ডিত দলে পরিবৃত থাকে, এবং ঐ সকল পণ্ডিত তাহাদিগকে সকল বিষয়ে আপনাদের মতামত জ্ঞাপন করেন এবং তর্কশাস্ত্রে ও মনোবিজ্ঞান বিষয়ে বিচার করেন। নবকৃষ্ণের সভা যে বহু বিখ্যাত পণ্ডিতে অলঙ্কৃত ছিল, তাহা জগন্নাথ তর্কপঞ্চানন এবং বাণেশ্বর বিদ্যালঙ্কা-


  1. হাতীবাগান-কলিকাতার উত্তরপূর্বাঞ্চলস্থ একটা পল্লীর নাম। বহু সংস্কৃতজ্ঞ পণ্ডিতের বাসস্থান বলিয়া ইহা প্রসিদ্ধ।