স্বামী বন্ধুবান্ধবগণ সহ তদুপরি উপবিষ্ট থাকিয়া স্নিগ্ধ সান্ধ্যসমীরণ সেবন করেন। এই সকল নৌকা অত্যন্ত ব্যয়সাধ্য, কারণ এগুলি অতি সুন্দর রঙ করা ও গিল্টি করা নানা প্রকার অলঙ্কারে সুসজ্জিত হয়, এবং ঐ সমস্ত সজ্জা অতি উজ্জ্বলভাবে বার্ণশ করা হয় ও তাহাতে বিলক্ষণ সুরুচির পরিচয় পাওয়া যায়।” ওয়ারেন হেষ্টিংসের কলিকাতা পরিত্যাগ কালীন তাঁহার বন্ধুবান্ধবগণ সম্বন্ধে লিখিত হইয়াছে যে, “তাঁহাদের বজরা নানা প্রকার ভক্ষ্য বস্তুতে ও অন্যান্য আবশ্যক দ্রব্যে পূর্ণ হইল, উহাদের উপর নিশান উড়িতে লাগিল ও বাদ্যকর-সম্প্রদায়গণ সুমধুর ঐকতান বাদ্য করিতে লাগিল; এইরূপে সজ্জিত হইয়া তাঁহারা নদীর মোহনাস্থিত ‘সাগর' পর্যন্ত তাঁহার সঙ্গে সঙ্গে গেলেন। লর্ড ভ্যালেন্সিয়া ১৮০৩ অব্দে লিখিয়াছেন যে, তিনি লর্ড ওয়েলেস্লির সরকারী বজরায় নদী দিয়া আসিয়াছিলেন; ঐ রজরা হরিৎ ও সুবর্ণ বর্ণে অতি মনোহর রূপে ভূষিত ছিল, উহার শিরোদেশে একটা গিণ্টিকরা বিস্তুৃতপক্ষ ঈগল এবং পশ্চাদ্ভাগে একটা ব্যাঘ্রের মস্তক ও দেহ শোভা পাইতেছিল; উহার মধ্যস্থলে ২০ জন লোক সচ্ছন্দে থাকিতে পারে।”
আসল কথা এই বে, সেই ধুলিময় পথটিই শকটপরিচালনের একমাত্র রাস্তা ছিল; গঙ্গার ধার দিয়া রাস্তা ছিল না, সহরের বাহিরেও শকটপরিচালনপথ ছিল না; কাজেই তঁহাদিগকে নদীতে আশ্রয় গ্রহণ করিতে হইত! ঘোড়দৌড়টা প্রাচীন কলিকাতার লোকের একটা বিশেষ প্রিয় পদার্থ ছিল।[১] খিদিরপুরে
- ↑ লর্ড ওয়েলেসলি কিছুদিন কলিকাতায় ঘোড়দৌড় রহিত করিয়া দিয়াছিলেন। কিন্তু রেনি সাহেব বলেন,—“গভর্নর জেনারেলের ভ্রূকুটী সত্ত্বেও কোন কোন কৌতুকপ্রিয় কৌশলে উহার যোগাড় করিয়া লইতেন।”