পাতা:কলিকাতার ইতিহাস.djvu/৩৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৩৬
কলিকাতার ইতিহাস

 হিন্দুসমাজ আমাদের সম্মুখে যে আদর্শ সংস্থাপন করিয়াছেন, আমরা তাহাতে আর সন্তুষ্ট নহি। যে কোন বৈদেশিক আদর্শ দেখিয়া আমরা তৎক্ষণাৎ বিমুগ্ধ হইয়া পড়ি, তাহারই অনুসরণ করিবার নিমিত্ত আমরা সর্বপ্রকার কৌশল সাগ্রহে আলোচনা করিতে প্রবৃত্ত হই ও নানাপ্রকার উপায় অবলম্বন করি। আমাদের মনের ভাবসকল যেন কেমন গুলাইয়া গিয়াছে। সমাজের বন্ধন দিন দিন শিথিল হইতেছে। পরন্তু সাহসের সহিত এই অনিষ্টকর অবস্থার গতিরোধ করিতে হইবে। যে দিন সামাজিক বন্ধনসমূহ অন্তর্হিত হয় এবং লোকে সমাজের প্রতি অনুরাগবিহীন ও সমাজের হিতার্থে কার্য করিবার প্রবৃত্তিহীন হইয়া পড়ে, সে দিন মানুষের সুখের পক্ষে বড়ই দুর্ভাগ্যের দিন। আমাদের এখন সেই দিন আসিয়া উপস্থিত হইয়াছে চতুর্দিকে উচ্ছৃঙ্খল ভাবের প্রাবল্য দৃষ্ট হইতেছে। সমাজের একতা ব্যাহত হইয়াছে। স্বাধীনবলম্বনপ্রবৃত্তির নিন্দা করা আমাদের অভিপ্রায় নহে। সময়ে সময়ে উহাদ্বারা মহৎ কার্য সাধিত হইয়া থাকে। কিন্তু সেই সঙ্গে মনুষ্যমাত্রেরই স্বদেশের প্রতি প্রীতি এবং স্বসমাজের আচারব্যবহারের প্রতি অনুরাগ থাকা আবশ্যক। কোন ব্যক্তিই প্রকৃতার্থে বিশ্বাসী হইতে পারে না। প্রত্যেক জাতিরই কতকগুলি বিশেষ ভাব ও প্রকৃতি আছে, তদ্বারা উহাকে অন্যান্য জাতি হইতে পৃথক্ করিয়া চিনিয়া লওয়া যায়। বিশাল মানবজাতির এক মহান্ উদ্দেশ্য সাধন সকল জাতিরই চরম লক্ষ্য বটে এবং তাহারই প্রতি দৃষ্টি রাখিয়া সকল জাতি কার্য্য করিতেছে বটে, তথাপি কিন্তু প্রত্যেক জাতি আপনার অবস্থা ও জ্ঞানের পরিমাণ ও উৎকর্ষাপকর্ষ অনুসারে এক এক নির্দ্দিষ্ট পথে