পাতা:কলিকাতার ইতিহাস.djvu/৩৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

একাদশ অধ্যায়।
৩৪৩

 মোটামুটি বলিতে হইলে, এমন কোনও রাজ্য এ পর্যন্ত দেখা যায় নাই, যেখানকার অধিবাসীর কিয়ৎপরিমাণে জ্ঞান ও সভ্যতা লাভ করিয়া পরিণামে আপনাদের শ্রেণীবিভাগের বা জাতিভেদের উপকারিতা উপলব্ধি করে নাই। ধর্ম্মই সকল স্থলে এরূপ শ্রেণীভেদের মূল নহে। মূল যাহাই হউক না কেন, শ্রেণীবিভাগ বা জাতিভেদ সর্বত্রই যে হইয়াছে, তাহাতে সন্দেহ নাই। লোকের প্রবৃত্তি বা অবলম্বিত বৃত্তিই এই শ্রেণীবিভাগের প্রধান কারণ। রাজাও এই শ্রেণীবিভাগের সামান্য কারণ নহে, যেহেতু স্বীয় প্রজাবর্গের সামাজিক ভাবের পরিবর্ত্তন করিবার রাজার বিশিষ্টরূপ ক্ষমতা আছে। রাজার এই বিশেষ ক্ষমতার পরিচালন দ্বারা ইউরোপীয়সমূহের কিরূপ অবস্থান্তর ঘটিয়াছে, তাহার তত্ত্বানুসন্ধান ও বর্ণনা করিতে হইলে বর্ত্তমান প্রবন্ধের আকার আয়তন বহু পরিমাণে বাড়িয়া যাইবে। সেইজন্য সে চেষ্টায় ক্ষান্ত হইতে হইল। হিন্দু ও অন্যান্য সভ্য জাতি সৎকার্য্যের সমাদর করিয়াছেন, কিন্তু ঐ সকল কার্য্যের পুরস্কার নির্দ্ধারণে তাঁহাদের বিললক্ষণ মতভেদ দৃষ্ট হয়। হিন্দু মতে, মানুষ সৎকার্য্য দ্বারা পূর্ব্বজন্মে (ইহ জন্মে নহে) উচ্চতর ও বিশুদ্ধতর পদলাভের অধিকারী হয়। সেই জন্যই অদ্যাপি দেখা যায় যে, শুদ্র অতি উচ্চ-পদ ও ধন সন্তোগ করিলেও সামাজিক হিসাবে ব্রাহ্মণ অপেক্ষা অধিক সম্মান প্রাপ্ত হয় না।

 রুশিয়ার নিহিলিষ্টদিগের উথ্থান ১৮০০ শতাব্দীর শেষভাগে ফ্রান্সের বলক্ষয়কর সামাজিক বিপ্লব ও অরাজকতা প্রভৃতি ইউরোপের বিষম সমাজবিপ্লবের ন্যায় কোনরূপ বিপ্লবসূচক গোলযোগ যে আমাদের দেশে ঘটে নাই ইহাই সুখের বিষয়। পাশ্চাত্য