পাতা:কলিকাতার ইতিহাস.djvu/৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দ্বিতীয় অধ্যায়।
৩১

 অনন্তর ১৭৫৭ অব্দে নবাব সিরাজুদ্দৌলা পুনর্ব্বার কলিকাতা আক্রমণ করিলেন এবং আমির চাঁদের (উমিচাঁদের) উদ্যানে শিবির সন্নিবেশ করিলেন। ঐস্থান এক্ষণে হালসিবাগান নামে খ্যাত। এই সময়ে কর্ণেল ক্লাইভ্‌, নবাব ও তদীয় অনুচরবর্গের সহিত সন্ধির প্রস্তাব করিবার ও উপঢৌকন প্রেরণ করিবার ব্যপদেশে জনৈক ইংরেজ ইঞ্জিনিয়ার (সম্ভবতঃ মিষ্টার আমিয়াথ) সমভিব্যাহারে মুন্সি নবকৃষ্ণকে প্রতিনিধিস্বরূপ প্রেরণ করিলেন। ইংরেজ পক্ষের এই দুইজন কর্ম্মচারী নবাবের শিবির-ব্যবস্থার সবিশেষ সূক্ষ্ম বিবরণ লিখিয়া লইয়া আসিলেন। অনন্তর ক্লাইভ্‌, আপনার সেনাদল লইয়া রজনীর শেষভাগে নবাবের শিবিরে উপস্থিত হইলেন এবং কামানের প্রথম আওয়াজেই নবাবের ও তাঁহার সর্দ্দারগণের পট্টাবাস উড়াইয়া দিলেন। পরন্তু নবাব দূরদর্শিতা প্রদর্শনপূর্ব্বক রাত্রিকালে তাঁহার নিজ পট্টাবাস পরিত্যাগ করিয়া অন্য এক তাম্বুতে আশ্রয় লইয়াছিলেন; সুতরাং তাঁহার প্রাণহানি হইল না,—তিনি পলায়ন করিলেন; কিন্তু তাঁহার অধিকাংশ সৈন্য বিনষ্ট হইল। ক্লাইভ্‌ তাঁহার অনুসরণ করিয়া পলাশীক্ষেত্রে উপস্থিত হইলেন। তথায় নবাবের প্রধান সেনাপতির সহিত তাঁহার তুমুল যুদ্ধ হইল। সেই যুদ্ধে নবাবের সেনাপতি হত হইলেন এবং তাঁহার সৈন্যগণ সম্পূর্ণরূপে পরাজিত ও ছত্রভঙ্গ হইয়া পড়িল।

 এ সম্বন্ধে আর এক প্রকার বিবরণ দৃষ্ট হয়। তাহাতে দেখা যায় যে, ইংরেজেরা পূর্ব্বোক্ত প্রকারে নবাব সিরাজুদ্দৌলার শিবির আক্রমণ করিয়া জয়লাভ করিলে, নবাব ১৭৫৯ খৃষ্টাব্দের ফেব্রুয়ারী মাসে ইংরেজদিগের সাতিশয় সুবিধাজনক সর্ত্তে তাঁহাদের সহিত সন্ধিস্থাপন করিতে বাধ্য হন। পরন্তু এই বিবাদের পরিসমাপ্তি হইতে