পাতা:কলিকাতার ইতিহাস.djvu/৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

তৃতীয় অধ্যায়।

রাজধানী।

 “কলিকাতা” নামের ব্যুৎপত্তিসম্বন্ধে নানা জনের নানা মত। এই নামের উৎপত্তি বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন লেখক ভিন্ন ভিন্ন প্রকার মন্তব্য প্রকাশ করিয়াছেন। কাহারও কাহার ও মতে “কাল কেটে” [১] হইতে এই নামটি উৎপন্ন “কলা কোর্ট” কথার অর্থ কালীদেবীর মন্দির। গঙ্গার আদি প্রবাহ অথাৎ আদি গঙ্গা(বা টলির নালা) নামক নদীর তীরে কালীঘাটে কালীদেবীর একটা বিখ্যাত মন্দির আছে। অতি প্রাচীন কাল হইতে এই স্থানটা ভারতবর্ষের মধ্যে একটি প্রধান তীর্থ বলিয়া পরিগণিত। এই সমস্ত কথা বিবেচনা করিয়া দেখিলে এই মতটিই সর্বাপেক্ষা প্রামাণ্য বলিয়া বোধ হয়। জনৈক ওলন্দাজ পর্য্যটক বলেন, কলিকাতা নামটি “গোলগথা” শব্দ হইতে উৎপন্ন। বহুকাল হইতে একটা গল্প প্রচলিত আছে যে, এক সময়ে বর্ষাকালে এক প্রকার রোগ উৎপন্ন হইয়া ইউরোপীয় অধিবাসীদিগের এক চতুর্থাংশ বিনষ্ট করে। সেই সময়ে নাবিকগণ কুসংস্কারবশতঃ কলিকাতাকে “গোল গথা” অর্থাৎ খর্পর-ভূমি বলিয়া জ্ঞান করিত। স্বর্গীয় রাজা স্যার

  1. কলিকাতা নামটী অতি প্রাচীনকাল হইতে সুপরিচিত। প্রাচীন হিন্দুরা ইহাকে “কালীক্ষেত্র” বলিতেন। পুরাণে উক্ত আছে, সতীর (অর্থাৎ কালীর) ছিন্ন অঙ্গের এক অংশ উহারই চতুঃসীমার মধ্যে কোনও স্থানে পতিত হইয়াছিল; সেই জন্যই এই স্থানের নাম ‘কালীক্ষেত্র” হয়। কলিকাতা “কালীক্ষেত্র” শব্দের অপভ্রংশ মাত্র।—ইণ্ডিয়ান এম্পায়ার ১৮৮৯।